উজান থেকে পানি নেমে আসায় তীব্র স্রোতেফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছ।

ভোলার কথা
ভোলার কথা সম্পাদক
প্রকাশিত: ৭:১৯ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২১

ছবি সংযুক্তঃ- শিমুল চৌধুরী, ভোলাঃ উজান থেকে নেমে আসা পানিত তীব্র স্রোতের কারণে ভোলা-লক্ষ্মীপুর নৌ রুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। নদী পারাপারের সময় বেড়ে গেছে দ্বীগুন। ফলে ফেরি পারাপারে ট্রিপের সংখ্যা কমে আসায় ঘাটে অপেক্ষায় থাকা দুই পাড়ে যানবাহনের লাইন দীর্ঘ হচ্ছে। এর মধ্যে কিষানী ফেরিটি ৩ দিন ধরে নষ্ট থাকায় ২ টি ফেরি দিয়েই চলছে পরিবহন পারাপার। ঘাটে দীর্ঘদিন ধরে আটকে থেকে নষ্ট হচ্ছে কাচাঁ ও পচনশীল পন্য। ফলে চরম ভোগান্তিতে পরতে হচ্ছে সাধারণ যাত্রী, চালক ও ব্যবসায়ীদের। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, খুলনা-চট্রগ্রাম, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের ২১ জেলার সড়ক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ভোলা-লক্ষীপুরের ইলিশা ফেরিঘাট। সম্প্রতি ভোলা-লক্ষীপুর রুটে একটি ফেরি বিকল ও মেঘনায় প্রবল স্রোত থাকায় যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভোলার ইলিশা ফেরিঘাটে পরিবহনের দেখা দিয়েছে দীর্ঘ যানজট। ২-৩ দিন অপেক্ষা করে ফেরিতে সিরিয়াল না পেয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে পণ্যবাহী গাড়ির চালক ও ব্যবসায়ীদের। তবে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিসি। সরজমিনে, ভোলার ইলিশা ফেরিঘাটে দেখা যায়, স্বাভাবিক সময়ে ভোলার ইলিশা থেকে লক্ষ্মীপুরের মজু চৌধুরীর ঘাট নদী পারাপারের জন্য বিআইডব্লিউটিসির নিয়মিত ৩টি ফেরি কনক চাপা, কিষানী, কুসুম কলি চলমান ছিলো। প্রতিদিন একটি ফেরি ২টি করে ট্রিপ দিতো। তাতে দুই পারের গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক ছিলো। কিন্তু উজানের পানির ডলে মেঘনা নদীর অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধির কারণে জোয়ারের সময় অ্যাপ্রোচ সড়ক ও গ্যাংওয়ে ডুবে যাওয়ায় ফেরিতে ওঠানামা বন্ধ থাকে। ফলে, ভোলার ইলিশা থেকে লক্ষীপুরের মজু চৌধুরীর ঘাট পর্যন্ত মেঘনার প্রায় ২২ নটিক্যাল মাইল নদী পারাপারের জন্য বিআইডব্লিউটিসির নিয়মিত ৩টি ফেরি চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। এর মধ্যে কিষানী ফেরীটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এই পথে পারাপার করা যাত্রী ও পরিবহনের চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। পাশাপাশি প্রবল স্রোতের কারনে ফেরিগুলোর গন্তব্য পৌঁছাতে সমস্যা দেখা দেয়ায় শুধু জোয়ারের সময় চলাচল করছে ২টি ফেরি। প্রতিকূল অবস্থায় ফেরির ট্রিপ সংখ্যা কমে যাওয়ায় ভোলার ইলিশা ফেরিঘাটে দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট। প্রায় ৩ কিলোমিটার জুড়ে শত শত যানবাহন আটকা পড়েছে। ফলে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকরা। ইলিশা ঘাটে থাকা কভার্ডভ্যান চালক হাসনাইন জানান, বরিশাল থেকে ধান নিয়ে চট্টগ্রামে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ভোলা ইলিশা ঘাটে এসেছেন তিন দিন আগে। কিন্তু, ফেরি বন্ধ থাকায় এখন ও সিরিয়াল পাননি তিনি। চরফ্যাশন থেকে চট্টগ্রাম যাবেন যাত্রীবাহি বাস চালক মোঃ ইবরাহীম বলেন, ভোর ৬ টায় চরফ্যাশন থেকে ইলিশার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে সোমবার ৮ টায় আসি। দুপুর ৩ টায়ও ফেরির দেখা নেই। তিনি আরও বলেন, এই ঘাটে এমনিতেই ফেরি কম। যেখানে প্রতিদিন ৫ টা ফেরি চলার কথা সেখানে ৩ টা ফেরি চলাচল করে। এখন আবার ১ টা নষ্ট। এতে ভোগান্তিতে পরতে হয় আমাদের। এদিকে কনক চাপা ফেরীর মাষ্টার কামাল পাশা বলেন, একটি ফেরী নষ্ট থাকা ও দিনের অর্ধেক সময় জোয়ারে ডুবে থাকে ফেরিতে ওঠানামার অ্যাপ্রোচ সড়ক ও গ্যাংওয়ে। এতে যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের ভোগান্তি চরমে ঠেকেছে। স্রোতে ফেরি চলাচলে বিঘ্ন হওয়ায় ট্রিপ কমে যাওয়ায় এই দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে বলে জানান তিনি। এ বিষয়ে ভোলা বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তা শাখাওয়াত হোসেন জানান, প্রবল স্রোতে কারনে ফেরি চলাচল ব্যহত হচ্ছে। যেখানে ২ ঘন্টা সময় লাগার কথা সেখানে ৩/৪ ঘণ্টা সময় লাগছে। জোয়ারের পানি বৃদ্ধির কারনে দুই পারের ঘাট ডুবে থাকায় ফেরি লোড-আনলোডে ৪/৫ ঘন্টা সময় লাগছে। তিনি আরও জানান, ৩টি ফেরির মধ্যে ১টি ফেরি বিকল। বিকল ফেরিটি মেরামতের কাজ চলমান আছে। এবং ঘাট ডুবে যাওয়ায়র সাময়িক যে সমস্যা হচ্ছে তা সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অচিরেই ফেরি সংকটের সমস্যার সমাধান হবে বলে জানান তিনি। জানা যায়, ভোলা- লকক্ষ্মীপুর এই ফেরি সার্ভিসে প্রতিদিন দুই শতাধিক পণ্যবাহী যানবাহন ও কয়েক হাজার যাত্রী পারাপার হয়। ঢাকা, লক্ষ্মীপুর, চট্রগ্রাম, নোয়াখালী, ফেনি, কুমিল্লাহসহ বিভিন্নস্থানে যাতায়াতে কম সময় লাগার কারনে এই রুটে যানবাহন চালকসহ সাধারণ মানুষের কাছে দ্রুততম সময়ের মধ্যে জনপ্রিয় ওয়ে ওঠে এ রুটটি। তাই এ রুটের সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান করে যাত্রীদের দুর্ভোগ কমিয়ে আনার দাবি জানিয়েছন ভুক্তভোগীরা। শিমুল চৌধুরী ভোলা ০৭.০৯.২০২১ ০১৭১১০৪৭৪৯৬