চরফ্যাশনে নবজাতকের পিতৃ পরিচয়ে কিশোর সায়মুনকে ফাঁসাতে মরিয়া দুষ্টচক্র
তুহিন খন্দকার, ভোলা
ভোলা চরফ্যাশন উপজেলা দুলার হাট নীলকমল ইউনিয়ন ৪নং ওয়ার্ডে সদ্য নবজাতকের দায়ভার কিশোর সাইমুন(১৫) কে চাপিয়ে দেওয়ার মিশনে নেমেছে এলাকার একটি প্রভাবশালী মহল।
স্থানীয়রা জানান, ওই ভিকটিমের পরিবার ঢাকায় বসবাস করা অবস্থায় অবৈধ মেলামেশার ফলে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে চরফ্যাশনের নীলকমল ইউনিয়ন এলাকায় চলে আসেন। বাড়িতে এসেই ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার জন্য স্থানীয় কতিপয় দুষ্ট চক্র মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে মিশনে নামেন।
সরজমিন তদন্ত সাপেক্ষে এলাকার বৃদ্ধ মহিলা,পুরুষ সচেতন মহলে একটাই কথা ঘটনার অন্তরালে অপরাধী কে বাঁচানোর জন্যই উঠে পড়ে লেগেছে কিছু কুচক্রী মহল।
এলাকার নিরীহ পান দোকানি মোস্তফার কিশোর সায়মন (১৫) কে ফাঁসাতে কুটকৌশল চালায় ওই দুষ্টচক্র। কিশোর সাইমুনের বিরুদ্ধে অবৈধ মেলামেশার অভিযোগ তুলে নানা রকম ভয়ভীতি আর হুমকিধামকীর রোষানলে ছোট পানের দোকানদার মোঃ মোস্তফার নির্ঘুমে রাতযাপন করেন।
এক পর্যায়ে পান দোকানি মোস্তফাকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে আইন আদালতের তোয়াক্কা নাকরে ২০২০ সালের ১৯ জুলাই সাইমুনকে তুলে নিয়ে রাতের আধারে দুষ্টচক্রের হোতা জিল্লুর, কাশেম, মালেক ফরাজী, মিলন, আলাউদ্দিন, মোঃ শামীম, মোঃ রুহুল আমিন, আঃ গনি বেপারী নেত্রীত্বে অন্তঃসত্ত্বা ভিকটিমের সাথে কিশোর সাইমুনের বিবাহ সম্পন্ন করে মিশন শেষ করেন। ভিকটিমের জন্ম সনদে ০১/০১/২০০৪ উল্লেখ থাকলেও বিয়ের বৈধতা আনতে বয়স বাড়িয়ে ০১/০১/২০০২ জন্ম সনদ তৈরি করা হয়। শুধু বিয়ে দিয়েই ক্ষান্ত হননি অসহায় মোস্তফার ঘরে তুলে দেয় ভিকটিমকে। এত কিছুর পরেও সায়মনের পরিবার অবৈধ ভাবে সন্তানের স্বীকৃতি দিতে নারাজ। সাইমুনের বাবার একটাই দাবি আদালতের মাধ্যমে ডিএনএ টেস্ট করাহলে তার ছেলে অপরাধী হলে সকল অপরাধ মাথা পেতে নেবেন।
এলাকার মানুষের দাবি, ঘটনার অন্তরালে প্রকৃত অপরাধীকে বাঁচানোর উৎকোচ নিয়ে ধরনা ধরছে কথিত সাংবাদিক ও কুচক্রী মহলের কাছে।
এদিকে এলাকার প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ সাইমুন নির্বোধ অবলা এখনো ওর মাঝে বিয়ের ফিলিংস না আসলে ও ঢাকা হতে আসা অন্তঃসত্ত্বা কিশোরীর পরিবারের সাজানো নাটকীয়তার রোসালনে নিঃশেষ হতে চলছে সায়মুনের অসহায় পরিবারের।
দুলার হাটে ছোট পানের দোকানেই চলছে এ পরিবারের রুটিরুজি। অথচ নেক্কারজনক একটি পরিকল্পনায় প্রকৃত দোষিদের আড়াল করার পায়তারায় সাইমুনের বাবার পানের দোকানটি বন্ধ করে দিয়েছে একটি প্রভাবশালী মহল।
ওই কিশোরী সদ্য নবজাতকের বাবা হিসেবে সাইমুনকেই দাবি করেন। তিনি বলেন দু’বছর ভালবাসা আর মেলামেশা সম্পর্কের ফলে এ নবজাতকের জন্ম হয়। তার পরিবারও একই দাবি করেন।
এ ব্যপারে এলাকার বজলু,কালাম,শামসুল হুদা,ফারুক,শাহজল হক,নাইম,বিলকিস, জীবননেছা,শামসুন্নাহার জানান, ভিকটিমের পরিবার ঢাকায় থাকার সুবাদে প্রকৃত অপরাধী ধরাছোয়ার বাইরে। এখন নির্বোধ সায়মুনের দিকে চাপিয়ে দেওয়া কিছু কুচক্রীদের সাজানো মনে হচ্ছে। কখনো ভিকটিম কিশোরী সাথে হাতাহাতি দুষ্টমি করতে ও চোখে পড়নি। তাছাড়া সাইমুন তার বাবার সাথে প্রতিদিন ভোরে দুলার হাট বাজারে গিয়ে রাতে বড় ভাইর সাথে বাড়িতে ফিরে।যতটুকু শুনছি ওই ভিকটিম কিশোরীর পরিবার নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে কোর্টে মামলা রুজু করছে সেখানে ডিএন এ টেস্ট করলেই প্রমান হবে।
ভিকটিম কিশোরীর অবৈধ সম্পর্কের বিষয়ে জানতে চাইল স্থানীয়রা জানান, ভিকটিমের জেডাতো ভাই রুবেল ও রহমানের সাথে ঢাকায় একই বাসায় থাকতো। করোনা লকডাউনে বাড়িতে বেড়াতে আসলে ও একই চৌকিতে রাতজাপন কারতে দেখেছেন বাড়ীর লোকজন। ওই কিশোরীর অন্তঃসত্ত্বার ঘটনা জানাজানির পরপরই তার জেডাতো ভাই রুবেলকে অন্যত্র বিয়ে করানো হয়।
এ বিষয়ে সায়ইমুন এর বাবা মোস্তফা জানান, আমার ছেলের বয়স মাত্র ১৫ বছর এবং কিছুটা মানষিক প্রতিবন্ধী। আমি ভিকটিমের পরিবারকে বলেছি আমার ছেলে যদি অপরাধ করে থাকে তাহলে আদালতে বাচ্চার ডিএনএ টেষ্ট করালে প্রমান হবে। কিন্তু তারা আমার ওপর জোর জুলুম করে হুমকি-ধামকি দিয়ে মেয়েকে আমার ঘরে তুলে দিয়েছে। এখন আবার আমার কাছে ৪ লক্ষ টাকা দাবি করছে। টাকা টাকা দিতে না পারায় তারা আমার পানের দোকান বন্ধ করে দিয়েছে। এসব কথা বলতে বলতেই তিনি কেঁদে ফেলেন।
এদিকে এলাকার মেম্বার আবুল কালাম আজাদ জানান, এ অপরাধের বিচার একমাত্র আদালতের এখতিয়ার। তবে আমার বাড়ি হতে ভিকটিম কিশোরীর বাড়ি ১০০ গজ দূরত্বে। ওদের পরিবারের সবাই ঢাকায় থাকে। করোনা লকডাউন এর সময় কিছুদিনের জন্য এলাকায় আসেন তারা। বাড়ী আসার প্রায় ১০/ ১২ দিন পর ভিকটিম এর বাবা তার মেয়ের অন্তঃসত্তার ব্যাপারে অবগত করলেও তখন সাইমুনের কথা জানাইনি। ডাক্তারের কাছে আল্ট্রা সনোগ্রাম টেস্ট করলে জানা যায় ৮৭ দিন আগে ভিকটিম অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে । অথচ বাড়িতে আসার ১০/১২ দিন পরই অন্তঃস্বত্তা যা হাস্যকর।
কয়েকদিন পরই ভিকটিমের পরিবার সাইমুন ওই কিশোরীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক করার অভিযোগ তোলে এলাকায় প্রচার করেন।
নীলকমল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ আমগীর হোসেন হাওলাদার জানান, সাইমুনকে আমি চিনতাম না। ওর বাবা নিয়ে আসায় অবাক হওয়া ছাড়া কোন উপায় ছিলো না। মিথ্যাকে আড়াল করার চেষ্টায় একদল প্রভাবশালী ফায়দায় লুটতে চাচ্ছে বলে আমার অনুমান হয়। অপরাধী কে আদালতের কাঠগড়ায় আসতেই হবে। মোস্তফার পানের দোকান বন্ধ প্রসঙ্গে তিনি আরো জানান, মোস্তফার অসহায় পরিবারটির রোজগারের পানের দোকান বন্ধ করে দিয়েছে আমি শুনেছি। এ অপরাধের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আমি সোচ্ছার।