স্কুল খোলার প্রস্তুতি শুরু,ধোয়ামুছার কাজ সম্পন্ন
![](https://www.bholarkotha.com/wp-content/uploads/2021/09/received_464560804532332-480x260.jpeg?v=1631347842)
দৌলতখান, ভোলা।
দীর্ঘ দেড় বছর পর ঘনিয়ে আসছে স্কুল-কলেজ খোলার দিন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামীকাল ১২ সেপ্টেম্বর স্কুল, কলেজ খুলবে । দৌলতখানে উপজেলায় স্কুল খোলা কে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা কাজ করছে। তবে এ স্কুল খুলবে শুনে প্রাথমিক স্কুলে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি আনন্দিত হয়েছেন । তাদের ধারনা, স্কুল খোলা থাকলে তারা তাদের প্রিয় শিক্ষক, প্রিয় বন্ধু সকলের সাথে সাক্ষাৎ করতে পারবে। সকলের সাথে দীর্ঘ দেড় বছর পরে কুশলাদি বিনিময় করতে পারবে সেজন্য তাদের মনে খুব আনন্দ লাগছে।
অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মোঃ নোমান জানায়, বাসায় বসে পড়াশোনা করতে আর ভালো লাগছে না। দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় আমরা একঘেয়েমি হয়ে গেছি। মাঝে মাঝে বাড়িতে লিখে অ্যাসাইনমেন্ট স্কুলে গিয়ে জমা দিয়ে আসি । শিক্ষকদের সাথে দেখা হয় না, বন্ধুদের সাথে দেখা হয়না, স্কুল খুললে তাদের সাথে আমাদের দেখা হবে। অনেক আনন্দ হবে মজা হবে সেজন্য আমরা খুব উদগ্রীব এ আছি । কবে আমাদের সেই দিনটি আসবে।
দৌলতখান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারি শিক্ষক হামিদ উল্লাহ জানান, প্রধান শিক্ষকের নেতৃত্বে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক আমরা শতভাগ প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। শ্রেণি কক্ষ বৃদ্ধি করে তা পরিস্কার ও জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের আঙিনাসহ পুরো ক্যাম্পাস পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। প্রধান ফটকে হাত ধোঁয়া ও জীবাণুমুক্ত করা, তাপমাত্রা মাপার যন্ত্র ও সবার জন্য মাস্কের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া তাৎক্ষণিক কোন শিক্ষার্থীর শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে প্রাইমারি চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখা আছে। সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে শ্রেণি কার্য পরিচালনা করবে। আশাকরি সকলের উপস্থিতিতে বিদ্যালয় আবার প্রাণ ফিরে পাবে।
দৌলতখানের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান ছাকিনা আদর্শ একাডেমীতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মুরাদ, নুরে আলম ও জহুরা সহ তিন কর্মী ক্লাস রুম সহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। তারাও খুব উৎসাহ-উদ্দীপনায় শ্রেণিকক্ষের বেঞ্চ, টেবিল ফ্যান মেঝে পরিষ্কার করছেন। শুধু তাই নয় তারা স্কুলের মাঠে থাকা ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করে রাখছেন।
অভিভাবক মোঃ আলাউদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা ক্লাসে বসে পড়াশুনার মজাটা ভুলে গেছে। তারা অনেকেই বিভিন্ন মরণব্যাধি গেমসের প্রতি ঝুঁকছে। অনেকেই বিভিন্নভাবে মাদকাসক্তের প্রতি প্রবল আসক্ত হয়ে গেছে। তবে তাদের আগ্রহ আছে স্কুলে এসে পড়াশুনা করার ।
দৌলতখান সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শফিকুল আলম বলেন,আমরা পর্যাপ্ত পরিমাণ মাক্স ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ক্রয় করে রেখেছি। যেসব শিক্ষার্থীরা মাস্ক ছাড়া বিদ্যালয় আসবে তাদের মাঝে আমরা মাস্ক সরবরাহ করবো। আমাদের বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে বিদ্যালয় নিয়োজিত কর্মচারীরা থাকবে তারা শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে নিরলস পরিশ্রম করবে ।
দৌলতখান মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মহিবুর রহমান বলেন,আমরা শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসুরক্ষার কথা বিবেচনা করে শতভাগ স্থাস্থ্যবিধির প্রতি গুরুত্বারোপ করবো। পর্যান্ত পরিমান মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও সাবান মজুদ করে রেখেছি। যেসব শিক্ষার্থীরা মাস্ক না পড়ে তাদেরকে আমরা মাস্ক সরবরাহ করবো।
দৌলতখান উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ শাহজাহান আলী শেখ বলেন,সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাস্ক পরিধান করতে হবে।শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্যসম্মতভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। তিনি আরো বলেন, আগামী ১২ তারিখ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠা খোলা হবে এটা শিক্ষার্থীদের জন্য খুবই আনন্দের। আবারো শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে উচ্ছাস প্রকাশ ও প্রাণ ফিরে পাবে। সকলের জন্য শুভ কামনা থাকল।