মেঘনায় জলদস্যুদের কাছে জিম্মি সাধারন জেলেরা..উঠে এসেছে নতুন তথ্য।
বেল্লাল নাফিজ
ভোলার মেঘনায় জলদস্যুদের নির্যাতনে ঘুমন্ত বিবেক নাড়া দিয়ে জাগ্রত করছে। এ যেন এক অসহায়ত্বের চরম নির্মম শিকার সাধারণ জেলেরা।অনেকেই শেষ সম্বল জাল, নৌকা হারিয়ে নিঃস্ব অবস্থায় জীবন যাপন করছেন ভোলায়। অরুন মাঝি (ছদ্মনাম) কষ্টের চরম শিখরে নিজের জীবনকে উৎসর্গ করে কিছু টাকা জমান। সেই টাকার সাথে মাছ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে দাদন এবং সাথে সুদের উপর টাকা নিয়ে একটি ইঞ্জিনচালিত বোর্ডে জাল নিয়ে মৎস্য আহরণে স্বপ্ন দেখেন। সেই দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন নিয়ে যখন ভোলার মেঘনায় মৎস্য আহরণ করতে জান ঠিক তারই এক সপ্তাহ না যেতেই জলদস্যুদের চরম নির্মমের শিকার হন। জাল নৌকা এবং মাঝিকে রেখে সাথে থাকা বাকি মানুষদের একটি ডুবোচরে নামিয়ে দেন…পরবর্তীতে অরুন মাঝির বাসায় ফোন দিয়ে তিন লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চান জলদস্যুদের কমান্ডার। অনেক কুসুমতির মধ্য দিয়ে হাওলাত-বরাত করে মাঝির নাম্বারে ১লক্ষ ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ পাঠালে একটি নির্জন চরে অরুন মাঝি কে একা রেখে যান। এখন নিঃস্ব হয়ে নিজের ভিটেমাটি বিক্রি করে দেনাদারের টাকা দিয়ে রাস্তার পাশে যুপ্টি ঘরে থাকতে হচ্ছে অরুন মাঝি কে। এরকম অনেক অরুন মাঝির মত বেঁচে থাকার স্বপ্ন জলদস্যুদের অস্ত্রাঘাত নিঃশেষ হয়ে আছে।
এরকম তথ্য সংবাদকর্মীর কাছে পৌঁছালে অনুসন্ধান করা শুরু করে ভোলার একদল চৌকস সংবাদকর্মী, তারই ধারাবাহিকতায় বেড়িয়ে আসে ভোলা সদর উপজেলা রাজাপুর থেকে জন্ম হচ্ছে মেঘনার নতুন নতুন ডাকাত বাহিনীর গ্রুপ। রাজাপুরের প্রভাবশালী একটি গ্রুপের বিরুদ্ধে দস্যুদের নিয়ন্ত্রণ করার অভিযোগ উঠেছে বলে জানিয়েছেন সাধারন জেলেরা। এ ছাড়াও জলদস্যুদের দল প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় ভোলার বিভিন্ন যায়গায় গড়ে উঠে।
জলদস্যুদের আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে এলাকার মানুষ। প্রতিরাতেই মেঘনার কোনো না কোনো এলাকায় হানা দিচ্ছে সংঘবদ্ধ একদল ডাকাত দল।
তবে মেঘনায় এসব ঘটনার খুব কম সংখ্যক মামলাই রেকর্ডভুক্ত হয়েছে বলে মেঘনার মৎসজীবি জেলেদের অভিমত। অনেক ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্তরা প্রতিকার পাবেন না এ আশংকা বা পুলিশি হয়রানির ভয়ে থানায় অভিযোগও দেন না সাধারন জেলেরা।
ফলে ডাকাত দল পার পেয়ে যাচ্ছে নির্বিঘ্নে। নৌ পুলিশের নজরদারির অভাব আর, কোষ্টগাড বাহিনীর রাত্রিকালীন টহল না থাকার কারণে মেঘনার ডাকাতি ঠেকানো যাচ্ছে না বলে অভিযোগ সাধারণ জেলেদের ।
সংঘবদ্ধ ডাকাত দল নানা কৌশলে তাদের নিজেদের নৌকায় জাল নিয়ে জালের আড়ালে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মেঘনায় ডাকাতি করে যাচ্ছে।
আর এসব ডাকাতদের শেল্টার দিচ্ছেন রাজাপুরের প্রভাবশালী এক ব্যক্তি বলে জানা গেছে।
এদিকে গত ৯ফেব্রুয়ারী ভোলা সদর থানার এস আই ইমাম হোসেন সরেজমিন রাজাপুরের ৬ ওয়ার্ডের শাজাহান কবিরাজের পুত্র কবির কবিরাজের বসত ঘরে মেঘনায় ডাকাতি করে আনা বিপুল পরিমানের কারেন্ট জাল জব্দকরেন। জব্দকৃত জালগুলো একই এলাকার বাসিন্দা মাইনউদ্দীন দালালের জিম্মায় রেখে যান। তবে জাল জব্দকালিন সময়ে পুলিশ ডাকাত দলের কাউকে আটক করতে পারেনি। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কেটে পরেন ডাকাত সদস্য কবিরে ভাই আলাউদ্দীন এমনটি জানান স্থানীয়রা। তবে আলাউদ্দীন মুঠোফেনে কলকাঠি নাড়ানো সহ কর্তাবাবু ও তার সাথে কাজ করা লোকদের চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস করেন। আলাউদ্দীন বলেন কর্তাবাবুদের ম্যানেজ পেমেন্ট করেই তারা চালান মেঘনার ডাকাতিযজ্ঞ।এদিকে আলাউদ্দীন ডাকাতি করা জাল ক্রয় করে রেখেছেন এবং মেশিন ক্রয় করে আবার তা ফেরৎ দিয়েছেন মর্মে জানান।আলাউদ্দীন আরো জানান আমরা করেছি বলে দোষ? মেঘনায় ডাকাতের রাজাপুরের আরো একটি গ্রুপ আছে তা তো কেউ জানেনা এবং কিছুই বলেনা।
এই বিষয়ে রাজাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজান খাঁন বলেন, আমার পরিষদে জাল ছিলো সেখান থেকে পুলিশে নিয়ে গেছে বলে জানান।
ভোলা সদর থানার ওসি এনায়েত হোসেন বলেন, জাল উদ্ধার করা হয়েছে এবং এর সাথে জড়িতদের আটকের চেষ্টা চলছে।
পাঠক আমাদের সাথে থাকুন আগামি পর্বে আমরা প্রকাশ করবো ম্যানেজ কর্তা বাবুদের পরিচয়।