ভোলায় তরমুজের বাম্পার ফলন ॥ ভালো দাম পাওয়ায় চাষিরা খুশি ॥
স্টাফ রিপোর্টারঃ মোঃ হাছনাইন আহমেদ।
ভোলায় তরমুজের ভালো ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় বেজায় খুশি তরমুজ চাষিরা। চরে চরে এখন চলছে তরমুজ বেচা কেনার ধুম। বেপররিরা মাঠ থেকেই তরমুজ কিনে নিয়ে যাচ্ছে। ভোলার তরমুজ চলে যাচ্ছে বরিশাল -ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। বিগত বছর গুলোতে প্রাকৃতিক দুযোগের কারনে এ বছর লক্ষমাত্রার চেয়ে কম জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে ৫৫৫৬ হেক্টর জমিতে কিন্তু লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিলো ৭৭২২ হেক্টর জমি। আবাদ কম হলেও ফলন ও দাম পেয়েছে বেশি। ভোলার চরগুলোতে চলছে এখন তরমুজ তোলার উৎসব।
চাষি আর বেপারীদের পদচারনায় মুখর ভোলার বিভিন্ন চরাঞ্চলগুলে। গত দুবার করোনা সহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসল হারিয়ে চাষিরা একেবারেই সর্বশান্ত হয়ে পরেছিলো। কিন্তু এবার আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবং মাঠ জুরে তরমুজের অসম্বব ফলন দেখে চাষিদের চোখে মুখে হাসি ফুটেছে। কৃষকরা জানায় এবার তরমুজে তেমন কোন পোকার আক্রমন হয়নি। ফলন ভালো হয়েছে তাই তারা দামও পাচ্ছে ভালো। ড্রাগন ও পাকিজা জাতের তরমুজ চাষ করেছে তারা।তারা বেশ খুশি। পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের কৃষি ইউনিটের আওতায় গ্রামীন জন উন্নয়ন সংস্থা নিরাপদ ফসল উৎপাদনে তরমুজ চাষিদের মাঝে ফেরোমেন ফাদ, কালার ফাদ, ভার্মি কম্পোস্ট ও জৈববালাই নাশক বিনামুল্যে বিভিন্ন চরে বিতরন করা হয়েছে বলে জানান গ্রামীন জন উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন মহিন। ভোলা সদর উপজেলার ভেলুমিয়া ইউনিয়নের চর কালেঙ্গার তরমুজ চাষি ইসুফ মাঝি জানান তিনি ১২ গন্ডা জমি থেকে ইতোমধ্যেই ৬৫ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেছে।
আরো প্রায় ১লক্ষ টাকার তরমুজ বিক্রি কথা চলছে।করিম মাঝি জানান, এক কানি জমিতে ২লক্ষ৭০,০০০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেছে । একই ভাবে ওই চরের নান্নু মিয়া, কবির মিয়া, জানান তারা বিগত সময়ে পোকার উপদ্রবে নানা ঔষধ দিয়েও ফল পাই নি কিন্তু এবার গ্রামীন জন উন্নয়ন সংস্থা থেকে প্রয়োজনিয় উপকরন সহায়তা পাওয়ায় রোগ বালাই থেকে তরমুজ ক্ষেত ছিলো মুক্ত। ফলন বেশ ভালো ও স্বাস্থ্য সম্মত ভাবে চাষ করা হয়েছে। এখন কেবল তরমুজ তোলা ও বিক্রির ধুম। মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন বেপারিরা। খেত থেকে তরমুজ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন বরিশাল -ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। ভোলার তরমুজ মিস্টি ও সুস্বাধু হওয়ায় বিভিন্ন জেলায় এ তরমুজের চাহিদা রয়েছে প্রচুর।
বেপারিরা মাঠ থেকে তরমুজ কিনে নৌকায় তুলে নিয়ে যাচ্ছে বরিশাল । কেউবা সড়ক পথে নিয়ে যাচ্ছে অন্যান্য জেলায়। চরের মধ্যে আকাবাকা ছোট ছোট খাল খুলেতে এখন তরমুজ ভরা শারি শারি নৌকা। কেউ নৌকায় তরমুজ তুলছে আবার কেউ নৌকা বেয়ে নিয়ে যাচ্ছে এক অপরুপ দৃশ্য চোখ জুড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ভিড় করেছে বাঙ্গির নৌকাগুলোও। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন, জানান বিগত বছরগুলোতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারনে তরমুজ চাষে কৃষকরা হারিয়ে ফেলেছিলো সে জন্য এবার চাষ কম হয়েছে, তবে ফলন হয়েছে প্রচুর বাজার দামও পাচ্ছে ভালো। আগামি বছর গুলোতে চাষিরা আরো বেশি জমিতে তরমুজ চাষ করবে বলে তিনি আশাবাদী।