ভোলার চরের বাসিন্দাদের ট্রলারে করে মূল ভূখণ্ডে আনার প্রস্তুতি
মোঃ রাকিবঃ
বঙ্গোপসাগরের সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি আরও শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। এ ঘূর্ণিঝড়ের নাম ‘ইয়াস’। ইয়াসের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাঁচতে ভোলার যেসব চরে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নেই, সেসব চরের বাসিন্দাদের কাল মঙ্গলবার সকাল থেকে ট্রলারে করে মূল ভূখণ্ডে নিরাপদে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলা মিলনায়তনে এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে গতকাল রোববার দিবাগত রাত থেকে ভোলার চরাঞ্চলে ঝোড়ো হাওয়া বইতে শুরু করেছে, যা আজ দুপুরেও অব্যাহত রয়েছে। রাতে অনেক এলাকায় বজ্রপাত হয়েছে। তবে কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। আজ সব উপজেলায় জরুরি সভা হয়েছে। এর আগে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবিলায় জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি গতকাল বিকেলের দিকে জরুরি সভা করেছে জেলা প্রশাসনের মিলনায়তনে। সেখানে ভোলার চরাঞ্চলের ৩ লাখ ১৮ হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে আনার প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক তৌফিক-ই-লাহী চৌধুরী। জেলার ৭ উপজেলার ৪০টি চরাঞ্চলকে ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করে বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে আনার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে.
গতকাল রোববার দিবাগত রাত থেকে ভোলার চরাঞ্চলে ঝোড়ো হাওয়া বইতে শুরু করেছে, যা আজ দুপুরেও অব্যাহত রয়েছে।
সভায় জেলা প্রশাসক আরও জানিয়েছেন, ঝড় মোকাবিলায় জেলার ৭০৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। গঠন করা হয়েছে ৭৬টি মেডিকেল টিম। অন্যদিকে সিপিপির ১৩ হাজার স্বেচ্ছাসেবী ছাড়াও রেড ক্রিসেন্ট ও স্কাউটস কর্মীদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে আটটি কন্ট্রোল রুম। ঘূর্ণিঝড়ে যাতে উপকূলীয় জেলা ভোলায় ক্ষয়ক্ষতি কম হয়, সে লক্ষ্যে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
সবাইকে সাহসিকতার সঙ্গে ঝড় মোকাবিলার আহ্বান জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, জেলা–উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্বাস্থ্য বিভাগসহ জেলা প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের কর্মকর্তা এবং মাঠ পর্যায়ের আনসার-ভিডিপি সদস্যসহ সবাইকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিবন্ধী, নারী ও শিশুদের নিরাপত্তায় আলাদা টিম গঠন করা হবে। প্রস্তুত থাকবে ফায়ার সার্ভিসের ১৪ টিম ও স্বাস্থ্য বিভাগের ২০০ কমিউনিটি ক্লিনিকও।
লালমোহন উপজেলার চরশাজালাল থেকে মো. নাসিম জানান, গতকাল রাত সাড়ে নয়টা থেকে ঝোড়ো হাওয়া ও বজ্রপাত হচ্ছে। তিনি নিজেসহ অনেক মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে সরে গেছেন। চরফ্যাশন উপজেলার ঢালচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুস সালাম হাওলাদার বলেন, ইউনিয়নের সব ট্রলার নিয়ে মানুষজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে আনা হবে। আজ জোয়ারের উচ্চতা এক হাত বেড়েছে। বাতাস ছিল।
ভোলার দৌলতখান উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বাতাস বইছে। তবে লোকজন এখনো ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নেয়নি। ঢালচরের মৎস্য ব্যবসায়ী শাহে আলম ফরাজি বলেন, ঢালচরে কোনো খাল নেই। ঝড় এলে কয়েক হাজার ট্রলার বিপদে পড়বে।