লালমোহনে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের ২০ পরিবারের মাঝে ঘরের চাবি ও জমির দলিল হস্তান্তর।
শাহিন আলম মাকসুদ, লালমোহন প্রতিনিধিঃ
লালমোহন উপজেলায় মজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে ঘরের চাবি ও জমির দলিল হস্তান্তর কার্যক্রম গণভবন থেকে ২৩ জানুয়ারী শনিবার সকাল ১০টায় লালমোহন উপজেলার হলরুমে ভার্চুয়াল মিটিং এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কতৃক ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান উদ্বোধন করেন। সাড়া দেশের ন্যায় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা আল-নোমান এর সভাপতিত্বে প্রশাসন সুবিধাভোগী ভূমিহীন ও গৃহহীনদের ২০ টি পরিবারের মাঝে ঘরের চাবি ও জমির দলিল হস্তান্তর করেন।
এসময় ভূমিহীন অযুফা খাতুন (৬৫) বলেন, স্বামী মারা যাওয়ার পরে ১ ছেলে ১ মেয়েকে নিয়ে ঠাই ছিলো অন্যের জমিতে। সন্তনরা সংসার চালানোর কোনো খোজ খবর নিচ্ছে না এবং কোন সামর্থ্য নেই। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাকা বাড়ি ও জমি পেয়ে খুশির সিমা নেই তার। শুধু জাহানার নয় তার মতো ভোলা জেলায় ৫২০ টি অসহায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার মুজিব বর্ষ উপলক্ষ্যে প্রধান মন্ত্রীর শেখ হাসিনার বিশেষ উপহার পেয়েছেন। মাথা গোঁজার স্থায়ী আবাসন পেয়ে দারুণ খুশি ভূমিহীন হতদরিদ্র্য সুবিধাভোগী পরিবারগুলো। জাহানার মতো খুশী ৭৫ বছরের বৃদ্ধা আনোয়ারা বেগম সে খুবই অসহায় তার একটা ছেলে আছে কিন্তু সে তার খোঁজ খবর নিচ্ছে না স্বামীর জমি নেই। সাধারণ মানুষের থেকে সহযোগিতা নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। এই ঘর ওনার অন্ধকার জীবনে আলো ফিরিয়ে দিয়েছে বলে জানান। এসময় তারা সবাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য দু’হাত তুলে দোয়া করেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনায় সারাদেশের মতো লালমোহনের খাস জমি খুজেঁ কাজটি বাস্তবায়ন করছেন উপজেলা প্রশাসন। আর নিয়মিত তদারকি করছেন পি.আই.ও কর্মকর্তা সোহাগ গোশ ও লালমোহন উপজেলার নির্বাহী অফিসার আল-নোমান। তিনি বলেন, মুজিব বর্ষ উপলক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লালমোহন উপজেলায় ২০টি ঘর প্রথম ধাপে অনুমোদন দিয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ না করে এর নির্মাণকাজ করা হয়েছে স্বচ্ছ ভাবে ঘরগুলো গুনগত মানধরে রাখার জন্য সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মাঠপর্যায়ে প্রশাসনের নির্দেশে তদারকি করা হয়েছে। যাতে যারা এখানে থাকবে তাদের কোন অসুবিধা না হয়। লালমোহন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল নোমান গত ১৮ জানুয়ারী সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় কালে জানান লালমোহ উপজেলার পি.আই.ও কর্মকর্তার সোহাগ গোশের সার্বিক তত্বাবধানে নিজেরাই লালমোহনে ২০ টি ঘর নির্মান করে দিচ্ছেন। তাতে কাজের মান অনেক ভাল হচ্ছে।
লালমোহন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল-নোমান আশ্রয়ন প্রকল্প পরিদর্শন করে কাজের মান সন্তোষ জনক বলে তিনি, “আশ্রয়ণের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার” এ শ্লোগানকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছেন মুজিববর্ষে কেউ গৃহহীন থাকবে না। এ লক্ষ্যেই লালমোহনে সরকারি খাস জায়গার ওপর ভূমিহীনদের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে ভূমিহীনদের ঘর। এখানে মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়েছেন ২০ পরিবার। যাদের কোনো ঘর ও জমি নেই। তাদের’ই এখানে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর মধ্যে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, স্বামী পরিত্যক্ত, প্রতিবন্ধীদের। প্রত্যেক পরিবারকে ২ শতাংশ জমির মালিকানাসহ লিখে দেওয়া হয়েছে একটি বসতঘর। তার সঙ্গে থাকছে রান্নাঘর, বাথরুম ও সামনে খোলা বারান্দা। এতে হতদরিদ্র সুবিধাভোগীরা দারুণ খুশি। এছাড়াও তাদের অন্যান্য সুবিধার জন্য রয়েছে বিদ্যুৎ ব্যাবস্তা।
এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, লালমোহন উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ গিয়াস উদ্দিন আহমেদ, লালমোহন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আলম হাওলাদার, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবুল হাসান রিমন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাসুমা বেগম, সহকারি ভূমি কর্মকর্তা মোঃ জাহিদুল ইসলাম, লালমোহন থানা অফিসার ইনচার্জ মাকসুদ রহমান মুরাদ, ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মিয়া, ফরহাদ হোসেন মুরাদ, মোস্তফা মাষ্টার, শাহাজান মিয়া, লালমোহন পৌর যুবলীগের সভাপতি ও ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরহাদ হোসেন মেহের প্রমূখ।