আমার মূল শক্তি, জনগণের সমর্থন ও বিশ্বাসই : শেখ হাসিনা
মোঃ ইসমাইল,বিশেষ প্রতিনিধিঃ
মায়ের মমতা নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করলে জনগণ অবশ্যই সমর্থন করবে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের একটা বিষয় অনুধাবন করতে হবে, নারী কেবল নারী নয়। নারীরা হলেন মা। তাই মায়ের মমতায় রাষ্ট্র পরিচালনা করলে অবশ্যই জনগণ আপনাকে সমর্থন দেবে। জনগণের সমর্থন ও বিশ্বাস আমি অর্জন করতে পেরেছি, এটাই আমার মূল শক্তি।’
মঙ্গলবার দুবাই এক্সিবিশন সেন্টারে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে ‘রিডিফাইনিং দ্য ফিউচার অব উইমেন’ শীর্ষক এক উচ্চ পর্যায়ের প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের একটি সংবিধান দেন। সেই সংবিধানে বলা হয়েছে, নারী ও পুরুষ সমান অধিকার ভোগ করবে।’
বাংলাদেশে দীর্ঘ সংগ্রামের পথ পাড়ি দিয়ে গণতন্ত্র পাওয়ার কথা তুলে ধরার পাশপাশি স্বাধীনতার পর মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে দেশ গঠনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা বক্তৃতায় তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যার পর সামরিক শাসকেরা রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করলে ‘নারীরা কোনো সুযোগ পায়নি’ মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, দীর্ঘ ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরে ‘নারীদের উন্নয়নে কাজ শুরু করে’। আমি যখন সরকার গঠন করি, তখন দেখলাম কোথাও নারীর কোনো জায়গা ছিল না। তারা ছিল পুরোপুরি অবহেলিত।’
জাতির পিতাকে হত্যার পর ছয় বছর নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে দেশে ফেরার কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমি দেশটাকে জানতাম, সমস্যাগুলো কী সেটা জানতাম। আমি আমার বাবার থেকে শিখেছি। আমার বাবা আমার মেন্টর। আমি শিখেছি আমার জনগণ ও দেশকে কীভাবে ভালোবাসতে হয় এবং দরিদ্র মানুষের জন্য কীভাবে কাজ করতে হয়।’
দীর্ঘ ২১ বছর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সামরিক শাসকরা বাংলাদেশ শাসন করেছে , সে কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা জানেন এই পৃথিবীর যেখানেই সামরিক শাসকেরা শাসন করেন, তারা খুবই রক্ষণশীল। কিন্তু আমি নারীদের জন্য সব কিছু উন্মুক্ত করে দিই।’
বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এভাবেই আমি জনগণের সমর্থন অর্জন করেছি। এটাই আমার মূল শক্তি। জনগণের সমর্থন, জনগণের বিশ্বাসৃ জনগণ অনুভব করে যে আমি যদি এখানে থাকি (রাষ্ট্র ক্ষমতায়), অবশ্যই তারা লাভবান হবে।’
ছয় বছর নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধুর দল আওয়ামী লীগের হাল ধরেন শেখ হাসিনা। সেসব দিনের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘দেশে ফেরার পর তার চলার পথও মসৃণ ছিল না। সব খুনি, যুদ্ধাপরাধী, তারা সেই সময় ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু আমি সেগুলো পরোয়া করিনি। আমি ভেবেছি আমাকে জনগণের জন্য কাজ করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একজন নারী হিসেবে অবশ্যই সমস্যা রয়েছে, কিন্তু আমাদের পুরুষ সহকর্মীরা আমাকে সহযোগিতা করেছেন বলে আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই। এটা আমার শক্তি।’