জনস্বাস্থ্য উপ-সহকারী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ঠিকাদারদের সংবাদ সম্মেলন
স্টাফ রিপোর্টারঃ
ভোলায় জনস্বাস্থ্য উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাসুম বিল্লার সীমাহিন দুর্নীতি, অনিয়ম ও সেচ্ছাচারীতার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকাল ১১টায় ভোলা প্রেসক্লারের হলরুমে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ঠিকাদাররা এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ঠিকাদারদের পক্ষে মোঃ আশরাফুল আলম বলেন, ভোলা সদর উপজেলা জনস্বাস্থ্য উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাসুম বিল্লাহ দীর্ঘ বছর ধরে একই পদে বিভিন্ন স্থানে কর্মরত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে সীমাহিন অফিসিয়াল দুর্নীতি, অনিয়ম, সেচ্ছাচারিতা দিয়ে উর্ধতন কর্মকর্তার আদেশ অমান্য করা, ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকসহ বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। তরই ধারাবাহিকতায় নিজেকে একজন আওয়ামীলীগের একজন সক্রিয় কর্মী পরিচয় দিয়ে ভোলা সদর উপজেলায় বিভিন্ন সময়ে ঠিকাদরদের সাথে কাজের কমিশন ও অনিয়মের শর্তে ভাগাভাগি ইত্যাদি নিয়ে প্রায়ই বাগ-বিতন্ডা ও নানা ধরনের অপকর্মের মাধ্যমে অফিসের পরিবেশ নষ্ট করে আসছে। তার রাজনৈতিক প্রভাব, ঘৃণ্য আচার-আচরণ ও কমিশন বাণিজ্য বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ঠিকাদারগণ অতিষ্ঠ।
তিনি আরো বলেন, প্রকৌশলী মাসুম বিল্লাহ ২০১৮ সালে লালমোহন উপজেলায় কর্মরত থাকাকালিন সময়ে নলকূপের গ্রাহকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা উত্তোলন, নলকূপ বিক্রি করা, নলকূপের পাটতন করা, ভুয়া বিল ভাউচার করে জলবায়ু প্রকল্পের টিউবওয়েল অন্যত্র বিক্রির ফিরিস্তি তুলে ধরে ওই অফিসের অফিস সহায়ক সাগর চন্দ্র দে সংবাদ সম্মেলন করেন। যা ২০২১ সালের মার্চের ১১ ও ১২ তারিখে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। তার এই অনিয়ম আর দুর্নীতির কারণে সেখান থেকে তাকে ভোলা সদরে বদলি করা হয়। ভোলা সদরে এসে মাসুম যেন আরো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠে।
মোঃ আশরাফুল আলম বলেন, ভোলা এসে মাসুম বিল্লাহ ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের আওতায় “সমগ্রদেশে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পে” ব্যাপক দুর্নীতি অনিয়ম করেন। জন্মস্থান ও কর্মস্থল একই স্থানে হওয়ায় বিভিন্ন সময়ে ঠিকাদারগণের কাছ থেকে বিভিন্ন উছিলায় টাকা দাবী করেন। কোন ঠিকাদার টাকা দিতে গড়িমসি করলে তার সাথে অমানবিক আচরণ করতেন। এমনকি চুড়ান্ত বিলের জন্য তার পিছনে মাসের পর মাস ঘোরাতেন। এছাড়া যে ব্যক্তির নামে নলকূপ বরাদ হতো তাকে না দিয়ে টাকার বিনিময়ে তা অন্যত্র বিকি করে দিতেন এবং পৌরসভার মধ্যে টিউবওয়েল বসানোর নির্দেশনা না থাকা সত্ত্বেও তিনি টাকার বিনিময়ে পৌরসভার মধ্যেই নলকূপ বসাতেন।
অন্যদিকে ভোলা সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মোশারেফ হোসেন তার মামা এবং চরসামাইয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন মাতাব্বর তার ফুফাতো ভাই হওয়ায় তাদের প্রভাব খাটিয়ে সিমাহীন দুর্নীতি ও নানা অপকর্ম করেছেন। ওই সয়ময় রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকার কারণে কেউ কোন টু শব্দও করতে সাহস করেনি। গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হওয়ার পর তার এই অনিয়ম ও দুর্নীতির ফিরিস্তি তুলে ধরে প্রধান প্রকৌশলী বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিলে গত ১৭ অক্টোবর তারিখে তাকে সাতক্ষীরা জেলার আসাশুনি উপজেলায় স্ট্যান্ড রিলিজ করে। কিন্তু তিনি বিভিন্ন অজুহাতে যেসখানে যোগদান করেন নি।
উল্লেখ্য, গত ১ ডিসেম্বর ভোলা শহরের তুলাতুলির একটি রিসোর্টে সংবাদ সম্মেলনে মাসুম বিল্লাহ নিজেকে জুলাই-আগষ্টের গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেয়ার দাবী এবং তার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন খাম-খেয়ালী ও অনিয়মের মাধ্যমে তাকে বদলির আদেশ দেয়াসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন।