তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার-৬

ভোলার কথা
নিউজ ডেস্ক সম্পাদক
প্রকাশিত: ৭:৩৫ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪

নিউজ ডেস্কঃ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে তোফাজ্জল হোসেন নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকা সন্দেহে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্যা জানানো হয়। এর আগে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকা সন্দেহে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টোরিয়াল বডি ৫ শিক্ষার্থীকে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করে। এছাড়া আরও একজনকে গ্রেফতারের কথা জানায় ডিএমপি। গ্রেফতাররা হলেন- মো. জালাল মিয়া, সুমন মিয়া, মো. মোত্তাকিন সাকিন, আল হুসাইন সাজ্জাদ, আহসানউল্লাহ ও ওয়াজিবুল আলম।

ডিএমপি জানায়, বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢবির ফজলুল হক মুসলিম হলের মূল ভবনের অতিথি কক্ষে চোর সন্দেহে অজ্ঞাতনামা কিছু লোক এক ব্যক্তিকে চড় থাপ্পড় ও মারধর করে। পরবর্তীতে হলের দক্ষিণ ভবনের অতিথি কক্ষে তাকে আবারো বেধড়ক মারপিট করা হয়। এক পর্যায়ে ওই যুবক অচেতন হয়ে পড়ার সংবাদ পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের জরুরী বিভাগে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকগণ তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই ঘটনা শাহবাগ থানায় জানালে পুলিশ মৃতদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে। ময়নাতদন্তের পর নিহতের লাশ তার আত্মীয়-স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

ডিএমপি জানায়, এই ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলার পর তদন্ত কর্মকর্তা ও ডিএমপি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনার কারণ অনুসন্ধান, জড়িতদের চিহ্নিতকরণ ও গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য থানা পুলিশের পাশাপাশি ডিবির একাধিক টিম কাজ করছে বলেও জানান তারা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার সন্ধ্যায় হলের ভেতরে ঢুকে পড়েন তোফাজ্জল নামে ওই ব্যক্তি। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে আটকে রেখে, আগের দিন হল থেকে হারিয়ে যাওয়া ছয়টি মোবাইল ফোন সেট ও মানিব্যাগ চুরির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। কঠোর জিজ্ঞাসাবাদের মুখে ওই যুবক বলেন, যদি তাকে কিছু খেতে দেওয়া হয়, তাহলে তিনি আসল চোরদের কথা বলবেন। ছাত্ররা তাকে ভাত খাওয়ান। কিন্তু ওই যুবক আসল চোরদের বিষয়ে তথ্য দিতে পারেননি। এরপর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা রাত ১০টা থেকে শুরু করে দুই ঘণ্টা ওই ব্যক্তিকে মারধর করেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।

বিষয়টি প্রক্টরিয়াল টিমকে জানানো হলে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে গুরুতর আহত তোফাজ্জলকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের কেউ কেউ জানান, তোফাজ্জল একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। নিহত তোফাজ্জল বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠালতলী ইউনিয়নের বাসিন্দা। অনেক আগেই তার বাবা-মা দুজনই মারা গেছেন।

এ ঘটনায় ফজলুল হক মুসলিম হলের আবাসিক শিক্ষক ড. আলমগীর কবিরকে প্রধান করে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- ড. মোহাম্মদ শফিউল আলম খান, অধ্যাপক জহির রায়হান, মোহাম্মদ মাহাবুব আলম, ড. আসিব আহমেদ, ড. তৌহিদুল ইসলাম ও এ কে এম নূরে আলম সিদ্দিকী।