বরিশালে সবজির পাইকারির চেয়ে খুচরা বাজারে দাম দ্বিগুণ
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
বরিশালে পাইকারি বাজারে যে দামে সবজি বিক্রি হচ্ছে, তার দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। এতে বাজার করতে এসে চরম বিপত্তিতে পড়ছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও খুচরা বিক্রেতারা দাম বাড়াচ্ছে বলে জানিয়েছে আড়তদাররা। আর খুচরা বিক্রেতাদের দাবি, কিছু কিছু সবজি ছাড়া বাকিগুলো অল্প লাভেই বিক্রি করছেন তাঁরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, নগরীর বহুমুখী সিটি পাইকারি কাঁচাবাজার থেকে পোর্টরোড সবজি খুচরা বাজারের দূরত্ব মাত্র আধ কিলোমিটার। বাকি বাজারগুলোর দূরত্ব হবে এক থেকে দুই কিলোমিটারের মধ্যে। তবে এই স্বল্প দূরত্বের বাজারে গিয়েই সবজির দাম কেজিতে বেড়ে যায় ২০-৪০ টাকা পর্যন্ত। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হয় কাঁচামরিচ।
বরিশাল নগরীর কীর্ত্তণখোলা নদী পাড় ঘেঁষে গড়ে ওঠা বহুমুখী সিটি পাইকারি কাঁচাবাজারে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ১৫-২০ ট্রাক যোগে সবজি আসে। এখানে আড়তদাররা কমিশনের মাধ্যমে সবজি পাইকারদের কাছে বিক্রি করেন। সবজির আমদানি ভালো হওয়ায় দাম কমেছে। তবে যারা খুচরা বিক্রি করেন তারা এখান থেকে নিয়ে বেশি দামে বিক্রি করেন। বাজার প্রতিদিন ওঠানামা করলেও খুচরা বিক্রেতারা তা নজরে আনেন না বলে দাবি পাকারি ব্যবসায়ীদের।
এক পাইকারি বিক্রেতা বলেন, বাজারে সবজির ঘাটতি নেই। দামও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যেহেতু সবজির বাজার ওঠা নামা করে তাই দাম কম-বেশি হতে পারে। এখন পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। তবে খুচরা বিক্রেতারা একটু বেশি দামে বিক্রি করছে। বাজার ঘুরে জানা যায়, পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ১২০-১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও খুচরা বাজারে তা ৪০-৫০ টাকা বাড়তি নিয়ে ১৮০-১৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
৪০ টাকা কেজির করলা খুচরা বাজারে ৭০ টাকা, ১৫-২০ টাকা কেজির পেঁপে ৩৫-৪০ টাকা, ১২০ টাকা কেজির গাজর ১৬০ টাকা, ১২০-১৫০ টাকার টমেটো ১৮০-২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এভাবে প্রতিটি সবজির দামে রয়েছে ২০-৩০ টাকা পর্যন্ত পার্থক্য রয়েছে।
এদিকে পাইকারি ও খুচরা বাজারের মূল্যে দ্বিগুণ পার্থক্যের বিষয়ে খুচরা সবজি বিক্রেতারা দিচ্ছেন নানা অজুহাত। এক খুচরা বিক্রেতা বলেন, ‘কাঁচামালের বিভিন্ন কোয়ালিটি থাকে। বাছাই করে আনলে দাম বেশি পড়ে। আর প্রথম দিকে বেশি দামে বিক্রি করতে পারলেও পরে শুকিয়ে গেলে আবার কম দামে বিক্রি করতে হয়। সবজি এক টাকার জায়গায় ১০ টাকায় কিনতে হয়। তবে যেগুলো কম দামে কিনি সেগুলো কম দামে বিক্রি করি। অনেক সময় সবজি নষ্ট হয়ে গেলে আমাদের লোকসান গুনতে হয়।’
এদিকে সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, পাইকারি বাজারের সঙ্গে খুচরা বাজারে দ্বিগুণ পার্থক্য। বাজার মনিটরিং না করলে দাম নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব না। বাজারে আসে এক ক্রেতা বলেন, ‘পাইকারি বাজারে দাম অনেক কম, খুচরা বাজারে ডাবল। এখান থেকে এক কিলোমিটার দূরত্বের বাজারে দাম কয়েকগুণ বেশি। যেহেতু খুচরা ক্রেতারা পাইকারি বাজারে গিয়ে কিনতে পারে না, তাই খুচরা বাজারে দাম কম হওয়া উচিত। এভাবে হলে আমাদের মতো সাধারণ ক্রেতারা চলতে পারে না।’