প্রবাসীর স্ত্রীকে ব্ল্যাকমেল অভিযোগ মাদ্রাসার পরিচালক হাঃ ইউছুফের বিরুদ্ধে,প্রতিবাদে প্রেস ব্রিফিং
![](https://www.bholarkotha.com/wp-content/uploads/2022/05/received_386172650078435-480x260.jpeg?v=1651767265)
রিয়াজ মাহমুদ স্টাফ রিপোর্টারঃ খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার রামগড় উপজেলায় এক প্রবাসীর স্ত্রীকে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আত্মসাত ও আপত্তিকর ছবি ফেইসবুকে পোষ্ট করে হেয়প্রতিপন্ন করার অভিযোগ ওঠেছে মারকায ওমর মাদ্রাসার সাবেক পরিচালক হাফেজ মোহাম্মদ ইউছুফ নামে এক ব্যাক্তি ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে।
অভিযোগকারী প্রবাসীর স্ত্রী ভিডিও এক প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে অভিযোগ এনে বলেন আমি নাজমা আক্তার, (৩৭)আমার বাড়ি রামগড় উপজেলা জেলা”র বাগাটিলা নামকস্থানে,আমি দীর্ঘদিন ঐখানে বসবাস করছি,আমার স্বামী এক জন প্রবাসী,আমি পরিবারের সকল সদস্যদের নিয়ে বসবাস করছি,কিছু দিন আগে আমার ছেলের পড়াশুনার সুবিধার্থে ছেলেকে রামগড় কেন্দ্রীয় কবরস্থানের সামনে অবস্থিত মারকায ওমর মাদ্রাসাতে ভর্তি করি,আমার বাড়ি থেকে ছেলের যাতায়াতের কষ্ট হচ্ছে বিধায় আমি মাদ্রাসার পাশে মাষ্টার পাড়ায় একটি বাসা ভাড়া নিয়েছি.মাঝে মধ্যে ছেলেকে নিয়ে ঐ বাসাতে থাকা হয়, বেশ কিছুদিন ছেলে মাদ্রাসা আসা যাওয়া করলে আমি ছেলেকে দেখতে এবং খাবার নিয়ে মাদ্রাসায় যেতাম,তখন আমার সাথে মাদ্রাসার পরিচালক হাফেজ ইউছুফের সাথে পরিচয় হয়,পরিচয় হবার সুবাদে হাফেজ ইউছুফ কে বলেছি আমার ছেলের প্রতি খেয়াল রাখার জন্য, এরপর হাফেজ ইউছুফ আমার ফোন নাম্বার নেন, তার পর মাঝে মধ্যে ছেলের পড়ালেখার খুঁজখবর নিতেন তিনি, আমিও ছেলে মাদ্রাসা থাকাকালীন ইউছুফকে ফোন করে খুঁজখবর নিতাম, কিন্তু এই খুঁজ খবর নেওয়াটা যে আমার জন্য কাল হয়ে দাঁড়াবে আমি বুঝতে পারিনি, হাফেজ ইউসুফ এর সাথে ভাল পরিচয় হবার পর থেকে সে আমাকে গভীর রাতে ফোন করে সেক্সচুয়াল প্রস্তাব সহ নানান বাজে কথা বলতো,, এক পর্যায় সে আমার সাথে রিলেশন করবে বলে জানান, তার এমন প্রস্তাবে আমি বিরক্ত হতাম,তাকে আমি ফোন না করার জন্য নিষেধ করি,তার পর হাঃ ইউছুফ আমাকে হুমকি দিয়ে বলে আমি তার কথামতো না চললে সে আমার ছেলের পড়ালেখার ক্ষতি করবে, আরো অনেক বাজে কথাবার্তা বলেছে এবং মেসেঞ্জারে বাজে ছবি সহ লেখালেখি করে বিরক্ত করতো, লজ্জায় আমি তেমন কিছু বলতাম না তাকে, ছেলের পড়ালেখার ক্ষতি যেন না হয় সেজন্য,সে ফোন দিলে রিসিভ করে কথা বলতাম, এভাবেই চলছে দিন,তবে ইউছুফ আমার সরলতার সুযোগ নিয়ে আমার কাছে বিভিন্ন অযুহাত দেখিয়ে টাকা পয়সা নিয়ে যেতো, এক পর্যায় সে তার সাথে আমার ফোন আলাপ রেকর্ড করে ব্লাকমেইল করার কৌশল অবলম্বন করলে, তা আমি টের পেয়ে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মাওলানা সাইফুলকে বিষয়টি অবহিত করি,তার পর মাদ্রাসার পরিচালক বিষয়টি যাচাইবাছাই করে সত্যতা প্রমাণিত হলে তাকে চাকুরীচুত্য করেন। তার পর শিক্ষক ইউছুফ ও তার সহযোগীরা আমার পিছনে আঠা র মত লেগে গিয়ে আমার বিরুদ্ধে নানান অপপ্রচার চালাচ্ছে, আমার অভিযোগের ভিত্তিতে মাদ্রাসার পরিচালক তাকে চাকুরীচুত্য করাতে এখন সে মাদ্রাসার পরিচালকের বিরুদ্ধেও অপপ্রচার করে যাচ্ছে, আমি ছেলেকে মাদ্রাসায় আনানেওয়ার পথে মাঝে মধ্যে মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা সাইফুল ইসলামের ফোন ফ্যাক্সের দোকানে যেতাম বিকাশ থেকে টাকা তুলতে,এছাড়া তার সাথে আমার কোন ধরনের কথাবার্তা হয়নি,এবং বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেওয়াতে বর্তমানে ঐ মাদ্রাসায় আমার ছেলেকে আর পড়াচ্ছি না।এমতাস্থায় আমি বলতে চাই রামগড় অনলাইন পেইজবুক নামে আইডিতে মাওলানা সাইফুলের বিরুদ্ধে যে অপপ্রচার চালানো হয়েছে তার সুনির্দিষ্ট কোন প্রমাণ নেই। এসব মিথ্যাচারের জন্য শিক্ষক হাঃ ইউসুফ দায়ী,কারণ আমাকে ডিষ্টাপ করাতে আমি অভিযোগ করলে তার চাকুরী চলে যায়, তাই সে এমন জগ্ন্য অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে এবং আমার সন্মানের ওপর আঘাত আনার চেষ্টা করছে,শিক্ষক ইউছুফের এমন কর্মকাণ্ডে আমার পরিবারে অশান্তি দেখা দিয়েছে। আমি এসব মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি, এছাড়াও আমার সন্মানের ওপর আঘাত আনাতে সামাজিক ভাবে আমার সন্মানক্ষুন্ন্য হয়েছে। নাজমা আক্তার আরো বলেন হাফেজ ইউছুফ সাথে ভাল একটি রিলেশন থাকাতে আমাদের ২জনের মধ্যে আপত্তির কিছু ছবি তোলা হয়,এগুলোকে পুঁজি করে হাফেজ ইউছুফ আমাকে বাধ্য করে বলে সাইফুলের ইমুতে ভিডিও ফোন দিয়ে একটি ছবি স্কিনশর্ট নিতে,আমি বাধ্য হয়ে সেকাজ করি,মুলত সাইফুলের কোন দোষ নেই।পরে স্কিন শর্ট নিয়ে ইউসুফ সাইফুলকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে,এবিষয়ে আমি অতি শীগ্রহী মাদ্রাসার সাবেক শিক্ষক হাফেজ ইউছুফ ও তার সহযোগী মাওঃ শহীদের বিরুদ্ধে খাগড়াছড়ি কোর্টে তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।এছাড়াও আমি এবিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।।অভিযুক্ত মাদ্রাসার হাফেজ মোহাম্মদ ইউসুফ কে এই বিষয়টি সম্পর্কে জানতে তার মোবাইলে কল দিলে তিনি কোন কথা বলতে রাজি হননি।।
মাষ্টার পাড়া মারকায ওমর রাঃ মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা সাইফুল ইসলাম জানান,ভদ্র মহিলার ছেলে মাদ্রাসায় ভর্তি করার পর শিক্ষক ইউছুফের সাথে তার পরিচয় হয়, ইউছুফ ভদ্র মহিলাকে,ফোনে ডিষ্টাপ করছে এই অভিযোগ আমার কাছে করলে,আমি বিষয়টি যাচাইবাছাই করে সত্যতা পেয়ে তাকে আমার মাদ্রাসা থেকে চাকুরীচুত্য করি,তার পর থেকেই হাফেজ ইউছুফ আমার বিরুদ্ধে নোংরামি করে আমার মাদ্রাসার সন্মান নষ্ট করার চেষ্টা করছে। রামগড় অনলাইন পেইজবুক আইডিতে আমার ছবির সাথে একটি মহিলার নগ্ন ছবি ও বাজে কথা পোষ্ট করা হয়েছে, তা দেখেই বুঝা যাচ্ছে আমার এবং মাদ্রাসার সন্মান নষ্ট করতে ইউসুফের নেতৃত্বে একটি কুরুচিপূর্ণ মহল লিপ্ত রয়েছে। এবিষয়ে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সাথে আলাপ আলোচনা করেই হাফেজ ইউসুফের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রামগড় উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার ফারুক সাংবাদিকদের জানান, শিক্ষক ইউছুফ ভদ্র মহিলা ও মাদ্রাসার পরিচালকের বিরুদ্ধে যে অপপ্রচার চালিয়েছে এটা খুবই লজ্জাজনক এবং দুঃখজনক বিষয়। ভদ্রমহিলা তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা করে এর সুষ্ট বিচার পেতে পারেন।আমি রামগড় উপজেলার সকলকে অনুরোধ করছি আপনারা নগ্ন ও কারো আপত্তিকর কোন ছবি সোস্যাল মিডিয়া পেইজবুকে পোষ্ট করে কাউকে হেয়প্রতিপন্ন করা থেকে বিরত থাকবেন।