অনাগত সন্তানের মুখ দেখা হলো শাহজাহানের | বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোন

ভোলার কথা
নিউজ ডেস্ক সম্পাদক
প্রকাশিত: ৩:০০ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১, ২০২৪

নিউজ ডেস্কঃ

মৃত্যু সব সময়ই অনাকাঙ্খিত। তবে কোন কোন মৃত্যু সারাজীবনের জন্য বয়ে আনে কান্না। স্বজন হারাদের চোখের জল বা শান্তনা দেয়ার ভাষা হারিয়ে ফেলেন অনেকে। তেমনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ঘাতকের একটি বুলেটে কেড়ে গেছে একটি স্বপ্ন। ভেঙ্গে গেছে একটি সংসার।

আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গেইটের সামনে একটি বুলেট এসে লাগে তার নাকের ডান পাশে। এতে গুরুতর আহত হন তিনি। ছাত্ররা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালের নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে কিন্তু হাসপাতালে নেয়ার আগেই ঢলে পড়েন মৃত্যুর কোলে।

গত ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বুলেটের আঘাতে স্বামীহারা হয়েছেন ভোলার দৌলতখানের ফাতেমা বেগম। গর্বে তার ৬ মাসের সন্তান। যে সন্তান ভুমিষ্ট হওয়ার পর কখনই দেখবে না তার প্রিয় বাবার মুখ। হয়ত কষ্টে অনাদরে বড় হতে হবে শিশুটিকে। তবে ভোলার দৌলতখানের সৈয়দপুর ইউনিয়নের স্বামীহারা এই ফাতেমার দায়িত্ব নেবেন কে?

ফাতেমা জানান, দুই বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়েছিলো তাদের। ঢাকার কাঙ্গারিচরে ভাড়া বাসায় স্বামী-স্ত্রী বসবাস করতে। স্বামী শাহজাহান ফুটপথের পাপস বিক্রি করতেন। তার উপার্জনে চলছিলো ছোট সংসার।

কিন্তু কে জানতো এভাবে মর্মান্তিক মৃত্যু হবে তার শাহজাহানের?

এদিকে স্বামী মৃত্যুর পর শশুর বাড়িতে আশ্রয় হয়নি ফাতেমার। জামায়াত ইসলামি বাংলাদেশ থেকে সহায়তা দেয়া হলেও সেই টাকাও পাননি তিনি। ততার শশুর-শাশুরি সেই টাকা নিয়ে গেছে।

ফাতেমা বলেন, কোন উপায় না পেয়ে অসহায় অবস্থায় বাবার বাড়ি ভোলার দৌলতখানের সৈয়সদপুর ইউনিয়নের ছোটধলী গ্রামে মায়ের সাথে আছেন। গর্কের তার ৬ মাসের সন্তান। চিকিৎসা করানোর কোন টাকা নেই তার। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন।

অসহায় ফাতেমা বলেন, এখন বেচে থাকার জন্য সহযোগীতা দরকার। সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হলে ঘুরে দাড়াতে পারবো। এছাড়া কেন উপায় নেই।

এদিকে ফাতেমার মা কবিতা বেগম তার মেয়ের সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। মেয়ে এবং অনাগত সন্তানের ভরন পোষন নিয়ে চোখ মুখে অন্ধকার দেখছেন।

কবিতা বেগম কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, সরকারের সহযোগীতা না পেলে কিভাবে দিন কাটবে মেয়েটির?

এ ব্যাপারে দৌলতখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়তি রানী কৈড়ি বলেন, শাহ জাহানের পরিবারটি খুবই অসহায়, সরকারিভাবেকোন সহযোগীতা পেলে অবশ্যই তাদের পৌছে দেয়া হবে।

এদিকে সমাজে একটু মাথা গোজার ঠাই আর বেচে থাকার জন্য সহযোগীতা চেয়েছেন অসহায় ফাতেমা।