তজুমদ্দিনে রাতভর নির্যাতন, রগ কেটে অটোরিকশা চালককে হত্যার অভিযোগ

ভোলার কথা
তজুমদ্দিন প্রতিনিধি সম্পাদক
প্রকাশিত: ৮:৫০ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১, ২০২৫

তজুমদ্দিন প্রতিনিধিঃ

তজুমদ্দিন উপজেলায় পরকীয়া প্রেম ও পূর্ব বিরোধের জেরে রাস্তা থেকে ডেকে নিয়ে রাতভর নির্যাতনের পর পায়ের রগ কেটে এক অটোরিকশা চালককে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহত ব্যক্তির নাম সেলিম (৪৫)। তিনি উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ঘোষের হাওলা গ্রামের মৃত মনতাজ মিয়ার ছেলে। জীবিকা নির্বাহ করতেন অটোরিকশা চালানো ও দিনমজুরের কাজ করে। সোমবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত শেষে নিহতকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

নিহতের স্ত্রী রেখা বেগম জানান, তার স্বামী আওয়ামী লীগ সমর্থক ছিলেন। দুই মাস আগে চুরির অপবাদ দিয়ে তাকে এলাকা ছাড়তে বাধ্য করা হয়। গত শনিবার (২৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় তিনি চট্টগ্রাম থেকে বাড়িতে ফেরেন। রাতেই বাড়ি ফেরার পথে তাকে তুলে নিয়ে যায় একদল লোক। রাতভর নির্যাতনের পর গুরুতর অবস্থায় বাড়ির নিকটস্থ একটি দোকানের সামনে ফেলে রেখে যায়। খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে তজুমদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখান থেকে অবস্থার অবনতি হলে ভোলা সদর হাসপাতালে নিলে রবিবার সন্ধ্যার দিকে তার মৃত্যু হয়।

রেখা বেগম অভিযোগ করে আরো বলেন, প্রতিবেশী মাসুমা বেগমের সঙ্গে পরকীয়া প্রেম ও পূর্ব শত্রুতার জেরে একই এলাকার মুজাম্মেলের ছেলে আনোয়ার, সিরাজ, রায়হান, রশিদের ছেলে রহিম এবং বায়জিদ ও নিরব মিলে চুরির অপবাদ দিয়ে পরিকল্পিতভাবে আমার স্বামীকে হত্যা করেছে।

এদিকে যাদের বিরুদ্ধে পিটিয়ে এবং রগ কেটে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বক্তব্য নেয়ার জন্য কাউকে-ই পাওয়া যায়নি। তারা সবাই পলাতক রয়েছেন। তবে অভিযুক্ত আনোয়ারের বাবা মুজাম্মেলের সাথে কথা বললনে তিনি দাবী করেন সেলিম চুরি করতে গেলে লোকজনের ধাওয়ার মুখে গণপিটুনিতে আহত হয় এবং পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে।

ভোলা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. জাবেদ ইমরান জানান, সেলিমকে গুরুতর আহত অবস্থায় ভর্তি করা হয়। তার দুই পায়ের রগ কাটা ছাড়াও শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক আঘাত ও ক্ষত ছিল। প্রচুর রক্তক্ষরণের ফলে তার মৃত্যু হয়।

তজুমদ্দিন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মহব্বত খান জানান, চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেলিমের মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে। একজন এসআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।