ভোলার কবি মোজাম্মেল হক মহিলা কলেজ’র অনিয়ম

ভোলার কথা
নিউজ ডেস্ক সম্পাদক
প্রকাশিত: ৪:২৭ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৪

নিউজ ডেস্কঃ

ভোলা সদর উপজেলার পরানগঞ্জ এলাকায় অবস্থিত কবি মোজাম্মেল হক মহিলা কলেজে যেন অনিয়ম-ই নিয়ম। নিয়ম বহিঃর্ভূত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগসহ অসংখ্য অনিয়মের অভিযোগ উঠে এ প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে। স্থবির হয়ে পড়েছে কলেজের সকল প্রকার কার্যক্রম।

সূত্রে জানা যায়, ভোলা শহরের উত্তরের গ্রামীণ জনপদের শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষে সাবেক সচিব এম মোকাম্মেল হক ১৯৯৭ সালে হালিমা খাতুন গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ নামে এ প্রতিষ্ঠানটিতে পাঠদানের কার্যক্রম শুরু হয়। ২২/০৩/২০২১ সালে প্রতিষ্ঠানটি আলাদা হয়ে কবি মোজাম্মেল হক মহিলা কলেজের কার্যক্রম শুরু করেন। তখন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পান অত্র কলেজের প্রভাষক আবুল কাশেম। পরবর্তীতে ০৩/০৭/২০২২ তারিখে পুনরায় আবুল কাশেমকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেন প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি এম মোকাম্মেল হক।

যা সর্ম্পূণ নিয়ম বহিঃর্ভূতভাবে নিয়োগ দেয়া হয়। অভিযোগ ওঠে ৯জন সিনিয়রকে অতিক্রম করে আবুল কাশেমকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়া হয়। গত ১৪/১১/২০২১ তারিখে দেশের বিভিন্ন পত্রিকায় অত্র প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম নিয়ে সংবাদ ছাপা হয়, যা আজো সুরাহা হয়নি। আবুল কাশেম দায়িত্ব নেওয়ার পর (গোপন বিজ্ঞাপন) এর মাধ্যমে ১জন অফিস সহকারী, ৩জন ল্যাব এ্যাসিসটেন্ট, ২জন অফিস সহায়ক, ১জন আয়াসহ মোট ৭ জনকে নিয়ম বহিঃর্ভূত ভাবে নিয়োগ দেয়া হয়, যা ভুলেও কেহ জানতে পারে নি।

তিনি কলেজের আয়-ব্যয়ের হিসান প্রদর্শন করেন না। রাজিব হোসেন নামের একজন পিয়ন নিয়োগ পাওয়া সত্ত্বেও কাজ করেন অন্য প্রতিষ্ঠানে। এমএলএসএস মোঃ লিটনকে গত ১৭/০৭/২০১৮ তারিখে সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাকে অদ্যাবধি প্রত্যাহার করা হয়নি। আরো অভিযোগ রয়েছে আবুল কাশেম কলেজের টাকা দিয়ে ভোলা কালিবাড়ী রোড, অফিসার পাড়া এবং ঢাকায় ল্যান্ড এবং এ্যাপার্টমেন্ট এর ব্যবসা করেন।

উল্লেখ্য, গত ০৫/০২/২০২৪ তারিখের স্মরক নং-৩৭০০.০০০০.০৭৪.০০২.০০১.২০২১৫১ মোতাবেক মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব সোলায়মান স্বাক্ষরিত এক পত্রে স্পষ্ট বলা আছে প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমিক বিদ্যালয় অথবা স্নাতক (পাস) কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক/উপধ্যক্ষ ব্যাতিত অন্য কোন শিক্ষককে প্রধান শিক্ষক/অধ্যক্ষের দায়িত্বভার অর্পণ করা যাবে না। তবে সহকারী প্রধান শিক্ষক/উপধক্ষের পদ শূণ্য থাকলে কর্মরত শিক্ষকদের মধ্যে থেকে জ্যেষ্ঠতম সহকারী শিক্ষক/জ্যেষ্ঠতম সহকারী অধ্যাপককে প্রধান শিক্ষক/অধ্যক্ষ করে দায়িত্ব পালন করতে পারবে। নিয়ম বহিঃর্ভূতভাবে অত্র কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ করা হলেও বিগত ৬ বছর ৯মাস ধরে অধ্যক্ষ নিয়োগের কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় নাই।

এদিকে সাময়িক বরখাস্তকৃত মোঃ লিটন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবুল কাশেমের কাছে একাধিক বার দরখাস্ত করা হলেও তিনি কোন কর্ণপাত করেন নি। তবে প্রতিষ্ঠানটির সভাপতির দায়িত্বে থাকা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সজল চন্দ্র শীল এর কাছে দরখাস্ত করলে তিনি ১৮/০৯/২০২৪ তারিখের স্মারক নং-০৫.১০.০৯১৮.০০০.১৫.০০৬.২০/৪৩৯ মোতাবেক মোঃ লিটনের কর্মস্থলে যোগদান এবং বকেয়া বেতনের বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন।

এদিকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবুল কাশেম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার নিয়োগ বৈধ না অবৈধ সেটা সভাপতি জানে। তাছাড়া একজন আগে একজন ছিলো তাকেও একইভাবে নিয়োগ দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমি কোন দুর্নীতি করিনাই। আমরা কিছু বন্ধু এবং শিক্ষক মিলে নিজেরা থাকার জন্য এপার্টমেন্ট তৈরি করতেছি, কাজেই দুর্নীতি বা অনিয়ম করার প্রশ্ন-ই আসেনা।

প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সজল চন্দ্র শীল বলেন, গত মাসের ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর আমাকে সরকার সভাপতি নিয়োগ দিয়েছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।