ক্ষমতার দাপটে জমি জবর দখলের অভিযোগ

চরফ্যাশন প্রতিনিধিঃ
চরফ্যাশনে বৃদ্ধের ৩১ বছরের ভোগদখলীয় বসত বাড়ি থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা ও কোটি টাকা মূল্যের জমি জবর দখলের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী ফারুক মাষ্টার ও তার জামাতা পৌর বিএনপির দপ্তর সম্পাদক শিমুল মাষ্টার ও লেকামান হোসেনের বিরুদ্ধে। একাধিকবার বসত বাড়ি জবর দখলের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে তার ওপর হামলা ও বসত ঘর ভাঙচুর করেন এবং মিথ্যা মামলায় হয়রানী করেন তারা। আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর ফারুক মাষ্টারের জামাতা শিমুল মাষ্টার পৌর বিএনপির দপ্তর সম্পাদক হওয়ায় ফের জমি দখলে সক্রিয় হয়ে উঠেন। শনিবার দুপুরে ওই চক্র তার জমি দখল নিতে বাড়ি ঘরে হামলা ও মারধর করে ২৬ শতাংশ জমি জবর দখল করে নেন। এসময় জবর দখলকারীরা একটি ঘর ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেন। তার ভোগদখলীয় জবর দখর ও বসত বাড়ি থেকে উচ্ছেদের হুমকি-ধমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন তিনি এবং তার পরিবার। এহেন পরিস্থিতিতে রবিবার সকালে চরফ্যাশন রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন বৃদ্ধ হাজী রুহুল আমিন।
লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী রুহুল আমিন জানান, তিনি পৌর সভার ৬নং ওয়ার্ডের দিয়ারা ২৪৫১ নং খতিয়ানে ও দিয়ারা ১১৭৪ নং খতিয়নের মালিক স্থানীয় জগদিস চন্দ্র দাসের কাছ থেকে ১৯৯৪ সনে ৩২ শতাংশ জমি ও ২০০২ সনে তরনী কান্ত দাসের কাছ থেকে ১ একর ৮ শতাংশ মোট ১ একর ৪০ শতাংশ জমি খরিদ করে বসত বাড়ি নির্মাণ করে পরিবার পরিজন নিয়ে ভোগদখলে আছেন। ১৯৯৭ সনে ফারুক মাষ্টার তার খরিদা মালিক তরনী কান্ত দাস থেকে ৮ শতাংশ জমি খরিদ করেন। ওই জমি খরিদের সময় ফারুক মাষ্টার ও তার জামাতা বিএনপি নেতা শিমুল মাষ্টার প্রতারণার মাধ্যমে তরনী কান্তের নামীয় আরোও ৩০ শতাংশ জমি বেশি লিখে নেয়। পরে বিয়টি প্রকাশ্যে এলে তারা স্থানীয়দের সমোঝতায় ৩০ শতাংশ জমি তরনী কান্ত দাসকে ফেরত দেন।
আওয়ামী লীগের ক্ষমতার সময়ে প্রভাবশালী ফারুক মাষ্টার ও তার মেয়ে জামাতা বিএনপি নেতা শিমুল মাষ্টার রাজনৈতিক নেতাদের ছাত্র ছায়ায় থেকে তরনী কান্ত দাস থেকে খরিদা ৮ শতাংশ জমির মালিক হয়ে তারা আমার খরিদা ভোগদলীয় প্রায় ৬ কোটি টাকা মূল্যের বসত বাড়ি জবর দখলের চেষ্টার করেন। পরে তারা জমি দখলে ব্যর্থ হয়ে আমার ওপর হামলা ও বসত ঘর ভাংচুর করেন এবং একাধিক মিথ্যা মামলায় হয়রানী শুরু করেন। এনিয়ে একাধিক শালিশ বৈঠক হলেও তারা প্রভাবশালী হওয়ায় কোন প্রতিকার মেলেনি।
তিনি আরোও অভিযোগ করেন, এতেই থেমে থাকেননি ওই চক্র ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ফারুক মাষ্টার নিজেকে বিএনপির তমকা লাগিয়ে জামাতা শিমুল মাষ্টার পৌর বিএনপির দপ্তর সম্পাদক হওয়ায় ফের তারা আমার জমি দখলে মরিয়া হয়ে উঠেন। শনিবার ওই চক্র সংঘব্ধ হয়ে আমার ওই খতিয়ানের খরিদা ভোগদখলীয় ২৬ শতাংশ জমি জবর দখল করে নেন। এবং তারা একটি ঘর ভেঙে গুড়িয়ে দেন। আমি বাধা দিতে গেলে আমার ওপর হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করেন। পরে থানা পুলিশের সহযোগিতায় আমি ও আমার পরিবার রক্ষা পাই।
অভিযুক্ত ফারুক মাষ্টারের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য জানা যায়নি। তবে তার জামাতা বিএনপি নেতা শিমুল মাষ্টার জানান, তার শ্বশুর ও তার সাথে হাজী রুহুল আমিনের কোন বিরোধ নাই। তারা তাদের খরিদা জমিতে দখলে আছেন। জবর দখলের বিষয়টি সঠিক নয়।
চরফ্যাশন থানার ওসি মিজানুর রহমান হাওলাদার জানান, ওই জমি নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলামান রয়েছে। থানায় একটি অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী হাজী রুহুল আমিন। অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হবে।