চরফ্যাশনের ৩ ইটভাটায় অভিযান, সাড়ে ৫ লাখ টাকা জরিমানা, বিপুল পরিমানে ইট ও জ্বালানী কাঠ জব্দ

ভোলার কথা
চরফ্যাশন প্রতিনিধি সম্পাদক
প্রকাশিত: ৬:৪৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৬, ২০২৫

চরফ্যাশন প্রতিনিধিঃ

চরফ্যাশন উপজেলার বিভিন্ন ঘনবসতি এলাকায় ইটভাটা স্থাপন করে ওই সকল ইটভাটায় নির্বিচারে পোড়ানো হচ্ছে বনের কাঠ। যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষক এবং হুমকির মুখে পরিবেশ। তাই পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এবং অবৈধ ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালায় জেলা প্রশাসন। তারই ধারাবাহিকতায় চরফ্যাশন উপজেলার ৩টি ইটভাটায় রবিবার বিভিন্ন সময়ে অভিযান পরিচালনা করে সাড়ে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

জানা গেছে, চরফ্যাশন উপজেলার ২৬টি ইটভাটার মধ্যে ১৮টি ইটভারই কোন সরকারী অনুমেদন নেই। তারা পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই প্রশাসনকে ম্যানেক করে ইটভাটাগুলো পরিচালনা করে আসছে। অভিযোগ আছে, উপজেলা ও জেলা প্রশাসন এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্তাদের ‘ম্যানেজ’ করেই অবৈধ ইটভাটাগুলো বছরের পর বছর ধরে বীরদর্পে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করছে। অবৈধ ইটভাটার দাপটে উজার হচ্ছে উপকূলের সবুজ বেষ্টনী পাশাপাশি ফসলী জমির মাটির সয়েল যাচ্ছে ইটভাটায়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষক, উজার হচ্ছে ফসলী জমি। এ সমস্ত অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবার দুপুরে চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ আইচা থানার চর মানিকা এলাকার ‘মানিকা ব্রিসক’ কে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ (সংশোধিত-২০১৯) এর আওতায় ৪, ৫, ৬, ৭ ও ৮ ধারায় অভিযুক্ত করে ১লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময় সেখান থেকে ৫০ হাজার পিস পাকা ইট, ২ লাখ পিস কাঁচা ইট এবং ৫শ’ মন জ্বালানী কাঠ জব্দ করা হয়। মানিকা বিকস এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়, যার নং-১/২৫।

অন্যদিকে একই উপজেলার রবিবার দুপুরে শশীভূশণ থানার আঞ্জুর হাটের দক্ষিণ চর মঙ্গল এলাকায় অবস্থিত রিফাত ব্রিসক-এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ (সংশোধিত-২০১৯) এর আওতায় ৫ ও ৮ ধারায় অভিযুক্ত করে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময় সেখান থেকে ৫ লাখ পিস পাকা ইট, ২ লাখ পিস কাঁচা ইট এবং ১শ’ মন জ্বালানী কাঠ জব্দ করা হয়। রিফাত ব্রিসক এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। যার নং-২/২৫।

অপরদিকে একই উপজেলার রবিবার বিকেল চরফ্যাশন থানার আমিনাবাদের আব্দুল্লাপুর এলাকায় অবস্থিত ইনাম ব্রিকস-এ-ও অভিযান পরিচালনা করা হয়। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ (সংশোধিত-২০১৯) এর আওতায় ৫ ও ৮ ধারায় অভিযুক্ত করে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময় সেখান থেকে ১ লাখ পিস পাকা ইট, ১ লাখ ৫০ হাজার পিস কাঁচা ইট এবং ৫ হাজার মন জ্বালানী কাঠ জব্দ করা হয়। ইনাম ব্রিকস এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। যার নং-৩/২৫।

অভিযান পরিচালনার সময় বিভিন্ন অনিয়মের কারণে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে এ সকল ইটভাটাকে জরিমানা প্রদান করেন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট যায়েদ হোসাইন। এ সময় ভোলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক তোতা মিয়া, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের জেপি গৌতম সিংহসহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

দেশব্যাপী অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে সরকারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তারই ধারাবাহিতকায় ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার অবৈধ ইটভাটাগুলোতেও রবিবার অভিযান পরিচালানা করা হয়েছে। আগামীতেও অবৈধ ইটভাটা এবং পরিবেশ রক্ষায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহান।