ভোলার লালমোহনে শিক্ষক দম্পতির দেওয়া আগুনে শিক্ষার্থী ঢাকা বার্ন ইউনিটে।

ভোলার কথা
ভোলার কথা সম্পাদক
প্রকাশিত: ১০:০৩ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৩

 

মিলি সিকদারঃ

ভোলার লালমোহন উপজেলার ডাওরী বাজার সংলগ্ন আইডিয়াল একাডেমী তে সাহারা ফাতেমা নামক (৮)বছরের এক শিক্ষার্থীকে আগুন দেয়ার অভিযোগ উঠেছে একই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক দম্পতি সিরাজ ও তার স্ত্রী আসমা আক্তার লিপির বিরুদ্ধে।

গত ১৪/০২/২৩ইং মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার আইডিয়াল একাডেমিতে এ ঘটনা ঘটে। আগুনে দগ্ধ শিক্ষার্থীর বাবা দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য তার মেয়েকে ঢাকা বার্ন ইউনিটে ভর্তি করেন।

অভিযুক্ত শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম নাজিরপুর সিনিয়র ফাযিল মাদরাসার ইংরেজি শিক্ষক। তিনি প্রায় সময় মাদ্রাসায় ক্লাস না করে তিনি তার ব্যক্তিগত একাডেমিতে সময় দেয় বলে স্থানীয়রা জানান। তার স্ত্রী আসমা আক্তার লিপি লেজ ছকিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা তিনি ও তার ক্লাস ফাকি দিয়ে একাডেমিতে সময় দেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, এই সিরাজুল ইসলাম বরাবরই অনেক বেপরোয়া গত কয়েক বছর আগে ফয়সাল নামে এক শিশু তার ব্যাক্তিগত অটো নিচে চাপা পড়ে মারা গিয়েছেন পরে তিনি বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য চার লাখ টাকা দিয়ে মীমাংসা করেন।

অভিযোগ করে শিক্ষার্থীর বাবা জসিম বলেন, আমার মেয়ে সাহারা ফাতেমা আইডিয়াল একাডেমী তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী। ঘটনার দিন স্কুলে সিরাজ হুজুর ও তার স্ত্রী আসমা আক্তার লিপি প্রতিষ্ঠান পলিথিন ও উৎকৃষ্ট কাগজে আগুন ধরায়। আগুন ধরিয়ে তারা সেই জায়গা থেকে সরে যায় বাচ্চারা আগুন দেখে সেখানে দৌড়ে যায়, তবে আমার মনে হচ্ছে সাহারার গায়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে আগুন দেওয়া হয়েছে। তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের কে মুঠোফোনের মাধ্যমে জানান, সাহারা ফাতেমার শরীরের আট পার্সেন্ট পুড়ে গিয়েছে । আজ সাহারার অপারেশন তাকে ওটিতে নিচ্ছে কিন্তু স্কুলের শিক্ষক একবারও তাকে ফোন করে সাহারার কোনো খোঁজখবর নেয়নি। তিনি আরো জানান আমি এখন ঢাকা বার্ণ ইউনিটে আছি। আগে আমার মেয়ে কে সুস্থ করে নেই তার পর আমি আইনত প্রক্রিয়া যাব। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।’

সুমাইয়া ও রুমা দুই সহপাঠী অভিযোগ করে বলে, বিভিন্ন সময় নানা অজুহাতে শিক্ষক সিড়াজ শিক্ষার্থীদের মারধর করেন। কিন্তু ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চায় না।

এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক সিড়াজুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি। তাঁর স্ত্রী আসমা আক্তার লিপি একই বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। পরে আসমা আক্তার লিপির মুঠোফোন নম্বরের মাধ্যমে সিড়াজুলের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আখতারুজ্জামান মিলন গণমাধ্যমকর্মীদের কে বলেন,এসমস্ত একাডেমির কোন অনুমতি নেই, আমার জানা মতে সরকার একটি প্রজ্ঞাপন জারি করবেন এবং রুলসের মধ্যে নিয়ে আনতে পারেন। ইতিমধ্যে লেজ ছকিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা আসমা আক্তার লিপির বিরুদ্ধে ক্লাস না করার অনেক অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি নিয়ে আমি সরোজমিনে অডিট করছি। সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলে তিনি আমাকে জানান আচমা আক্তার প্রতিনিয়ত সঠিকভাবে ক্লাস করছেন। তবে একাডেমির বিচ্ছিন্ন ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি স্কুল পরিদর্শন করবে। অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে সত্যতা পাওয়া গেলে আমরা কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।

লালমোহনের ইউএনও অনামিকা নজরুল গণমাধ্যমকর্মীদের কে বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। ঘটনাটি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেওয়া হবে।