দালাল ও প্রতারকদের দখলে ভোলা সদর হাসপাতাল

ভোলার কথা
ভোলার কথা সম্পাদক
প্রকাশিত: ১১:২৮ পূর্বাহ্ণ, জুন ৮, ২০২১

 

মোঃ সোহেল, ভোলাঃ দালাল ও প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে হয়রানীর শিকার হচ্ছে ভোলা সদর হাসপাতালের রোগীরা। গত কয়েক মাস ধরে হাসপাতালে দালালের উৎপাতে গরীব অসহায় রোগীদের ভোগান্তি এখন চরমে। হাসপাতালের জরুরী বিভাগ থেকে ডাক্তার ঔষধ লিখে দেয়া মাত্র ডাক্তার ও রোগীদের কাছ থেকে কৌশলে প্রিসক্রিপশন ছিনিয়ে নিয়ে দালালদের নির্ধারিত দোকান থেকে ঔষধ বিক্রি করে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করছে।
দালালদের এসব অপতৎপরতা বন্ধে কতৃপক্ষের কোন তৎপরতা নেই বললেই চলে।

মুল ভূখন্ড থেকে বিচ্চিন্ন দ্বীপজেলা ভোলা । এ দ্বীপের ২০ লক্ষ মানুষের একমাত্র ভরসা ভোলা সদর হাসপাতাল। চিকিৎসকদের তথ্য মতে, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট এই হাসপাতালটিতে প্রতিদিন দূর-দূরন্ত থেকে এসে ৩শ থেকে ৫শ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। হাসপাতটিতে ২২জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও ১৪টি পদই শূন্য রয়েছে। শয্যাসংকট, পর্যাপ্ত জনবল ও ডাক্তার না থাকায় অতিরিক্ত রোগী সামাল দিতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতাল কতৃপক্ষ। কখনও কখনও মেঝেতে জায়গা পেতেও প্রতিযোগীতায় নামতে হয় রোগীদের। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, শয্যা সংকট আর অব্যবস্থাপনা সব মিলে চরম বিঘ্নিত হচ্ছে স্বাস্থ্য সেবা। আর এসব সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভাল কেবিন ও সিট ব্যবস্থা করে দেয়ার কথা বলে রোগীদের টাকা পয়সা হাতিয়ে নিচ্ছে সংঙ্ঘবদ্ধ দালাল চক্র। হাসপাতালের দেয়ালে দালালমুক্ত সাইনবোর্ড থাকলেও দালালদের অপতৎপরতা বন্ধে কতৃপক্ষের কোন ভুমিকা নেই।

কয়েকটি দালাল চক্র সদর হাসপাতালের বিভিন্ন স্থানে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত অবস্থান নিয়ে রোগীদেরকে হয়রানি করছে। মাঝে মাঝে ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীদের কাছ থেকে ঔষধ আনার নাম করে টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায়। ইমারজেন্সি থেকে প্রিসকিপশন লিখে দিলে হাসপাতালের স্টাফ পরিচয় দিয়ে তার প্রিসকিপশন কেড়ে নেয়া হয়। ঔষধের দাম বাবদ দাবী করা হয় ২ হাজার টাকা। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে দালালদের র্দুব্যবহারের শিকার হন সাধারন রোগীরা। এমনকি দালালকে চা-পানি খাওয়ার টাকা দিলে ভাল সিট পাওয়া যায়। অন্যথায় সিট না পেয়ে হাসপাতালের মেঝেতে থাকতে হয় বলেও অভিযোগ রোগীদের। এতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে দূর-দূরান্ত থেকে আসা সাধারন মানুষ ।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যামে দালালদের সংবাদ প্রচার হলে, আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী বিশেষ অভিযান করে, কয়েকজন দালাল চক্রকে আটক করলে, কিছুদিনের জন্য সদর হাসপাতালে দালালদের আনাগোনা বন্ধ থাকে পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবারও দালালদের উৎপাত বাড়তে থাকে, তবে হাসপাতালে যদি কোনো সংবাদকর্মী সংবাদ সংগ্রহের কাজে যায় তাহলে, দালাল চক্রটি বুঝতে পেরে কিছুক্ষণের জন্য উদাও হয়ে যায়।

সদর হাসপাতাল কে দালালমুক্ত করতে হলে প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে বলে জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ।