ভোলায় জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব চরমে, সীমানা পিলার তুলে ফেলার অভিযোগ,

ভোলার কথা
ভোলার কথা সম্পাদক
প্রকাশিত: ৮:২৬ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৫, ২০২১

 

ভোলা প্রতিনিধিঃ

ভোলা সদর উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের রুহিতা গ্রামে জমি নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে সীমানা পিলার তুলে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। এতে যে কোনো সময় সংঘর্ষের আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা। আলীনগর ইউনিয়নের রুহিতা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক খান অভিযোগ করে জানান, ভোলা সদর উপজেলাধীন আলীনগর ইউনিয়নের রুহিতা মৌজার এসএ ৩৮ খতিয়ানে পিতার ওয়ারিশ ও খরিদ সূত্রে ১ একর ৮৯ শতাংশ জমির মালিক তিনি ও তার ভাতিজা শাহনেওয়াজ রুবেল খান গং (যার বিএস খতিয়ান নং ১৬৫)। এ ছাড়াও রুহিতা মৌজার এস এ ৩২ নং খতিয়ানে খরিদ ও ওয়ারিশ সূত্রে ২৭ শতাংশ জমির মালিক তিনি ও তার ভাতিজা শাহনেওয়াজ রুবেল খান গং। যার দলিল নং ৪৮৩৬ তাং ৭/৯/৯১ ও ২৭২১ তাং ৪/৫/৯২ দাগ নং ২৭১,২৭৩,২৭৪ এবং ২৭৭।
তিনি বলেন, একই এলাকার বাসিন্দা আব্দুল জলিল ও তার সন্তানরা দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে তাদের ২৭ শতাংশ জমি দাবি করে আসছে। কিন্তু এ জমির প্রকৃত মালিক আমরা। এ জমি সংক্রান্ত দ্বন্দ্বের বিষয়টি আমি আলীনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বশির আহমেদকে অবহিত করি।
গত জুন মাসে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে আমি ভোলা সদর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি। সে অভিযোগের প্রেক্ষিতে থানায় বসে উভয়পক্ষের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে দেখা যায় যে জমির প্রকৃত মালিক আমি। তখন থানা থেকে একজন এসআই এর নেতৃত্বে কয়েকজন পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে এসে তদন্ত করে গিয়েছিল। তখন তারা আমার কাগজপত্র সঠিক দেখে আমার পক্ষে রায় দেয়। জমির সীমানা নির্ধারণের দিন আমার পার্শ্ববর্তী ওয়ার্ড এর খোকন মেম্বার ও উপস্থিত ছিলেন। জমির সীমানা নির্ধারণ হওয়ার পর আমরা আমাদের জমিতে সীমানা পিলার পুতে দেই। গত ১৮ জুলাই সকাল ৮ টার দিকে আব্দুল জলিলের নেতৃত্বে তার নাতি ইমরান, তার ছেলে আমির হোসেন, নাজিম উদ্দিন আমাদের তফসিল সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করার জন্য আসে। আমরা তাদেরকে বাধা দিলে আব্দুল জলিল ও তার নাতি এবং সন্তানেরা আমাকে প্রকাশ্যে খুন-জখমের হুমকি প্রদান করে। তাদের হুমকিতে আমি আমার পরিবারবর্গ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি । নিরাপত্তাহীনতার ভয়ে আমি ভোলা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি। এ ঘটনার জের ধরে গত ২০ আগস্ট আব্দুল জলিলের ছেলে দেলোয়ার হোসেন খোকন আমার জমির সীমানার ১০ টি পিলার তুলে নিয়ে যায় এবং আমাদের মালিকানাধীন সুপারির বাগান একটি টং ঘর নির্মাণ করে। আব্দুর রাজ্জাক খান আরো বলেন, আব্দুল জলিলের নাতী ইমরান সেনাবাহিনীর সৈনিক হিসেবে কর্মরত আছে। সে বাড়িতে আসলেই জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আমাদেরকে বিভিন্ন সময় হুমকি-ধামকি প্রদান করে।
আলীনগর ইউনিয়নের রুহিতা গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন গত ১৮ জুলাই আব্দুল জলিল গংদের হামলায় আব্দুর রাজ্জাক খান পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্য ও তার জমি চাষ করা চাষী আহত হয়েছিলেন।
এ বিষয়ে জানতে সরোজমিনে আব্দুল জলিলের বাড়িতে গেলে তিনি বলেন, আমরা কাউকে মেরে আহত করিনি। আমি আব্দুর রাজ্জাক খানকে নাল থেকে ২৭ শতাংশ জমি লিখে দিতে রাজি আছি কিন্তু বাগানের জমির দাবি আমি ছাড়বো না। এ বিষয়ে অপুর অভিযুক্ত আব্দুল জলিলের ছেলে দেলোয়ার হোসেন খোকনের কাছে সীমানা পিলার তুলে ফেলার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তা অস্বীকার করেন। জলিল আরও বলেন, বমার প্রতিপক্ষ ভোলা ডিসি অফিসে চাকরি করে আর তার ছেলে পুলিশে চাকরি করে। তাই তারা উল্টো ক্ষমতা দেখাচ্ছে। তারা স্থানীয় চেয়ারম্যানের শালিসিও মানেনা।
এ জমি সংক্রান্ত বিরোধের বিষয়ে জানতে চাইলে ভোলা সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ এনায়েত হোসেন বলেন, এ বিষয়ে আমি একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের বিষয়ে একজন এস আইকে বিষয়টি তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছি।
অভিযোগের তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত ভোলা সদর মডেল থানার এসআই মোঃ সোহাগ বলেন, আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে এ অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করেছি এবং ভোলা সদর মডেল থানায় এ বিষয়ে একবার বসা হয়েছিল। সীমানা নির্ধারণ নিয়ে দু’গ্রুপের মধ্যে কিছুটা বিরোধ রয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে আলীনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ বশির আহমেদ রোববার এ প্রতিবেদককে বলেন, ওই জমি নিয়ে বিরোধের বিষয়টি মিমাংসা করার জন্য উভয় পক্ষকে বলেছিলাম। কিন্তু একপক্ষ সেটা না মেনে কেন থানায় জানিয়েছে তা বোধগম্য নয়।

শিমুল চৌধুরী
ভোলা
০৫.০৯.২০২১
০১৭১১০৪৭৪৯৬